‘কী ছিলে আমার’ গানের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ গতকাল (১৯ অক্টোবর) রাতে উদ্ধার করা হয়েছে। রাজধানীর রামপুরায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। সেখান থেকেই তার মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। চার থেকে পাঁচ দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
Advertisement
নব্বই দশকের তুমুল শ্রোতাপ্রিয় এ শিল্পীর মৃত্যুতে ভক্ত-অনুরাগী ও সংগীত সংশ্লিষ্ট সবার মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্মৃতিচারণ করে নানা কথা লিখছেন।
এদিকে মনি কিশোরকে নিয়ে নব্বই দশকের আরেক জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আদনান বাবু একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে তিনি মনি কিশোরের মরদেহ কিভাবে উদ্ধার করা হয়েছে তা তুলে ধরেছেন। আদনান বাবু লিখেছেন, ‘গতকাল (১৯ অক্টোবর) রাত ৯টা ৫১ মিনিট। অফিস থেকে বের হব, এমন সময় আঙ্কিত কণ্ঠে আমাকে কল দিলেন শ্রদ্ধা ভাজন প্রিয় বড় ভাই বাংলাদেশ টেলিভিশনের অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক শামসুদ্দোহা তালুকদার, যার বাড়ি রামপুরা টিভি রোডে এবং প্রায় ২ বছর যাবত মনি কিশোর উনার বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
দোহা ভাই জানালেন, গত ৪ দিন যাবত মনি কিশোর বাসায় ফিরছে না এবং কিছুক্ষণ আগে বাড়ির গেট কিপার মনি কিশোরের ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটটি চেক করতে গিয়ে দেখে সেটি ভিতর থেকে বন্ধ করা, অনেকক্ষণ যাবত দরজা নক করার পর ও কেউ সেটি খুলছে না, মোবাইল ফোন বন্ধ এবং কিছুটা দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আমি তৎক্ষণাৎ নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে বললাম। আমার কলটি কেটে এক্ষুণি ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে ঘটনা স্থলের ঠিকানা দিন এবং বিষয়টি তাদেরকে অবহিত করুন প্লিজ এবং কি কথা হলো আমাকে দ্রুত জানান।’
Advertisement
আদনান বাবু আরও লেখেন, ‘কথা অনু্যায়ী ১০ মিনিটের মধ্যে দোহা ভাই আমাকে জানালেন, রামপুরা থানা থেকে একটি টিম ১৫ মিনিটের মধ্যে এসে ঘটনা স্থলে এসে পৌঁছবে। রাত ১১টা ৪৬ মিনিট। জানলাম, না ফেরার দেশে জনপ্রিয় গায়ক, বন্ধু, ভাই, প্রিয়জন মনি কিশোর।’
আরও পড়ুন:
‘কী ছিলে আমার’ গানের জনপ্রিয় শিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ উদ্ধার শুভ্র দেবের ফোন বন্ধ, মামাকে নিয়ে যা লিখলেন ফেসবুকেআদনান বাবু ১৯৯১ সালে গান ‘রং নাম্বার’ অ্যালমামের মাধ্যমে গানে ভুবনে আসেন। এটির প্রায় প্রত্যেকটি গান তুমুল শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করেছিল। তিনি বর্তমানে গান থেকে দূরে রয়েছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে গার্মেন্টস ব্যবসা করছেন। পাশাপাশি চালাচ্ছেন একটি এনজিও। তিনি যখন ‘রং নাম্বার’ অ্যালবাম প্রকাশ করেন, তখনো একটি বায়িং হাউসে চাকরি করতেন এ শিল্পী। ‘৮৯ থেকে ’৯৫ সাল পর্যন্ত সেই চাকরি করেছেন।
চাকরিরত অবস্থায় ‘রং নাম্বার’ অ্যালবামটি প্রকাশ করেন তিনি। এরপর আরও ৮-১০টি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন। তার অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘রং নাম্বার টু’, ‘আনন্দ’, ‘রং বেরং’, ‘চেয়েছি প্রেম’, ‘নিশ্বাসে আছ তুমি’ প্রভৃতি। ১০-১২টি মিশ্র অ্যালবামেও গান গেয়েছেন। তার শেষ অ্যালবাম ‘হৃদয়ে আছো তুমি’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালে, যার কাজ শুরু করেন ২০০৭ সালে। সংগীতার ব্যানার থেকে অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়। ২০১৯ সালে একুশে টিভিতে একটি গানের অনুষ্ঠানে শেষ পারফর্ম করেন এ শিল্পী। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছয় বছর ধরে বিটিভিতে ‘গীতি আলাপন’ নামে একটি গানের অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও করেছেন। অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেলে আর বিটিভিতে কাজ করা হয়নি।
Advertisement
এমএমএফ/জেআইএম