রাজনীতি

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পছন্দমতো ‘চেতনার বয়ান’ তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নিজেদের পছন্দমতো একটি ‘চেতনার বয়ান’ তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ, এমন মন্তব্য করেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

Advertisement

শনিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা কলেজ মিলনায়তনে কালের ধ্বনি নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থানে আহত কবি ও লেখকদের গল্প’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে আলী রীয়াজ বলেন, ভয়ের সংস্কৃতি কেটে গেছে, প্রশ্ন করার মতো মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গণ–অভ্যুত্থানের যে লক্ষ্য ছিল, তা এখন বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বিস্ময়কর অর্জন সম্ভব হয়েছে, তা অবশ্যই ধরে রাখতে হবে। ছাত্র-জনতা জীবন উৎসর্গ করে আমাদের হাতে এই অর্জনকে জিম্মা হিসেবে দিয়ে গেছে। অভ্যুত্থানের যে লক্ষ্য ছিল, তা এখন বাস্তবায়ন করতে হবে। আসুন, সবাই মিলে এই বড় কাজ সুসম্পন্ন করি।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, অনেকের মনে হয়তো নানা প্রশ্নের উদয় হয়েছে, হতাশা এসেছে। তা আসতেই পারে, সে জন্য আমাদের প্রশ্ন করতে পারেন। ভয়ের সংস্কৃতি কেটে গেছে। প্রশ্ন করার মতো মুক্ত পরিবেশ এখন সৃষ্টি হয়েছে।

আলী রীয়াজ আরও বলেন, বিগত স্বৈরশাসক, চারটি খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে ছিল। প্রথমত, তারা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করে ভয়ের সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছিল। দ্বিতীয়ত, তারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নিজেদের পছন্দমতো একটি ‘চেতনার বয়ান’ তৈরি করেছিল এবং স্তাবক লেখক, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিসেবীদের দিয়ে সেই বয়ানের পক্ষে অনবরত সাফাই গাইয়ে একটি প্রভাব সৃষ্টি করেছিল। তৃতীয়ত, গণমাধ্যমগুলো গণমাধ্যমের চরিত্র অনুসারে কাজ করতে পারেনি। কারণ, গণমাধ্যমের মালিকও নানাভাবে স্বৈরাচারের সঙ্গে বহু ধরনের ব্যবসায়িক সম্পর্কে যুক্ত থেকে গণমাধ্যমগুলোকে সেই সব ব্যবসার স্বার্থ সুরক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে। চতুর্থ শক্তিটি হলো, দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে বিদেশের প্রভাব ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা। এ ক্ষেত্রে সরাসরি ভারত ও প্রচ্ছন্নভাবে চীনের প্রভাব কাজ করেছে।

অধ্যাপক রীয়াজ আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর যেন এর আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হয়ে না যায়, কোনোভাবেই স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসতে না পারে, সে জন্য শক্তির এই চার উৎসের আমূল সংস্কার করতে হবে। পরিবর্তন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আলোচনায় আরও অংশ নেন মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, কাজল রশীদ, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, আমিরুল মোমেনীন। অতিথি বক্তা ছিলেন গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়েজী, নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম, চিকিৎসক সাকিরা পারভিন, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও ছাত্রলীগের নির্যাতনে নিহত আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ।

Advertisement

কেএইচ/এসএনআর/এমএস