দেশজুড়ে

শিক্ষানবিশ এএসপিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত

রাজশাহীতে অনুষ্ঠিতব্য শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছে। সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান স্থগিত করার ঘটনা এটাই প্রথম। রোববার (২০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা একাডেমিক প্যারেড গ্রাউন্ডে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের এ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে শনিবার রাতে অনিবার্য কারণবশত সেটা স্থগিত করা হয়।

Advertisement

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ এবং প্যারেড পরিদর্শন করার কথা ছিল। তবে শনিবার রাতে জানানো হয়, অনিবার্য কারণবশত শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল। সেটি স্থগিত করা হয়েছে। রোববার দুপুর ১টায় আরএমপি সদর দপ্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

এদিকে সমাপনী কুচকাওয়াজ উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাওয়া দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। পুলিশ বাহিনীর সংস্কার না হওয়া, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ক্যাডার বানানোর অভিযোগসহ শহীদদের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো সরকারি দাওয়াতে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন এই সমন্বয়ক।

Advertisement

ফেসবুক পোস্ট তিনি উল্লেখ করেন, ‘দাওয়াতটা স্বজ্ঞানে প্রত্যাখ্যান করছি কারণ-

১) এই ৬২ জন এএসপি হাসিনার আমলে নির্বাচিত হইছে। আর কত চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বিসিএস (পুলিশ)-এ নিয়োগ হতো তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ব্যক্তি আমার জায়গা থেকে তাই উক্ত প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার পক্ষপাতী নই। তাদের ব্যাপারে তদন্ত হয়েছে কি না!

২) পুলিশ বাহিনী এখনো কোনো সংস্কার হয়নি। অপরাধীরা এখনো ধরা পড়েনি। তাই আমি শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানী করে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বৈধতা দিতে পারি না।

দাওয়াত কার্ডটা নিয়ে আপনাদের কাছে দেখানোর উদ্দেশ্য ছিল মামলার নাম ঠিকানায় দাওয়াত পাঠাইছে এটা দেখানো। আমি নিতান্তই একজন নগন্য মানুষ কিন্তু আমার এথিক্স স্পষ্ট, আমার শহীদ ভাই আলী রায়হান, সাকিব আঞ্জুমসহ সকলের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি সরকারি কোনো দাওয়াত গ্রহণ করবো না।’

Advertisement

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আমরা জানতে পেরেছি কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই আওয়ামী লীগের দোষরদের এএসপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাইদের মৃত্যুর মিছিল এখনো চলছেই। এমতাবস্থায় এই দোষরদের নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া মানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানী করা। তাই আমি উক্ত অনুষ্ঠানের একজন আমন্ত্রিত অতিথি এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে এই অনুষ্ঠান প্রত্যাখ্যান করলাম।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী শাসনামলে প্রশাসনে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়ম, অবৈধভাবে নিয়োগের সুষ্ঠু তদন্তগ্রহণ করার পাশাপাশি আন্দোলনে প্রশাসনের অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবি জানান তিনি।

সাখাওয়াত হোসেন/মনির হোসেন/এফএ/এমএস