শিক্ষা

ক্লাস শুরুর আগেই ভর্তি পরীক্ষার বিরল জটে ৭৫ হাজার শিক্ষার্থী

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সেশনজট শব্দটির সঙ্গে বেশ পরিচিত শিক্ষার্থীরা। কখনও কখনও স্নাতক বা স্নাতকোত্তরে ক্লাস শুরুর আগে জটে পড়ার বিড়ম্বনাও দেখা যায়। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায়ও জট হওয়াটা ‘বিরল’। সেই বিরল ভর্তি পরীক্ষার জটে পড়েছেন কৃষি গুচ্ছভুক্ত দেশের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু প্রায় পৌনে এক লাখ শিক্ষার্থী। উচ্চশিক্ষা নিতে ভর্তি পরীক্ষার এমন জটে আটকা পড়ে এখন দিশা খুঁজে পাচ্ছেন না ভর্তিচ্ছুরা।

Advertisement

জানা যায়, কয়েক দফায় পিছিয়ে আগামী ২৫ অক্টোবর ৮টি কেন্দ্রে কৃষি গুচ্ছভুক্ত ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে গত ২২ এপ্রিল থেকে ৮ জুন পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন নেওয়া হয়। সেখানে আবেদন করেন প্রায় ৭৫ হাজার শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, আবেদন করেও প্রায় পৌনে এক লাখ শিক্ষার্থী চারমাস ধরে অপেক্ষায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করেও তারা এখনো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারেননি। এরই মধ্যে ২০২৪ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে কৃষি গুচ্ছভুক্ত ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ভর্তি পরীক্ষার অপেক্ষায় এইচএসসি পাস করা দুই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। অথচ তাদের সঙ্গে এইচএসসি পাস করে অন্য শিক্ষার্থীরা সাধারণ, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং সাধারণ গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়ে ভর্তি হয়ে পুরোদমে ক্লাস করছেন।

আরও পড়ুন

Advertisement

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সিট পাবে না জিপিএ-৫ পাওয়া লাখো শিক্ষার্থী কৃষি গুচ্ছের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ২৫ অক্টোবর স্নাতক শেষেও স্থায়ী ক্যাম্পাস পাবেন না শিক্ষার্থীরা

যদিও ভর্তি কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বলছে, এবার ভর্তি কমিটি পরিবর্তন হয়েছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিও পরিবর্তিত। তারপরও তারা দুর্গাপূজার ছুটির আগে ভর্তি পরীক্ষা নিতে চেয়েছিলেন। কিছু ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তা কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়। তাছাড়া সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণেও কিছুটা দেরি হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে অর্থাৎ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এ জট কাটিয়ে উঠতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কৃষি গুচ্ছ ভর্তি সমন্বয় কমিটি সূত্র ও শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২২ ও ২০২৩ সালে যারা এইচএসসি পাস করেছেন, তারা এবার (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) কৃষি গুচ্ছভুক্ত ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে পেরেছেন। ২০২২ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ২০২৩ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হয়েছে একই বছরের ২৬ নভেম্বরে। অর্থাৎ, আবেদন করা শিক্ষার্থীদের কেউ (২০২২ ব্যাচ) এইচএসসি পাসের এক বছর ৮ মাস এবং কেউ কেউ ১১ মাস পর ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

‘জুলাই-আগস্টে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে বেশি দেরি হয়ে গেছে। এখানে কারও দায় নেই, এটা পরিস্থিতির সৃষ্টি।’- অধ্যাপক এএসএম লুৎফুল আহসান

কৃষি গুচ্ছে ভর্তি ‘পরীক্ষাজট’ হলো কীভাবে?

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে। ওই সময় আটটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি কমিটি করে দেওয়া হয়। সেই কমিটি ইউজিসির সঙ্গে পরামর্শ করে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে প্রতি বছর কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়।

Advertisement

প্রথম বছর কিছুটা যথাসময়ে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, ভর্তি ও ক্লাস শুরু হয়। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে পড়ে। এতে কিছুটা দেরিতে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। ফলে ভর্তি পরীক্ষাও কিছুটা পিছিয়ে যায়।

আরও পড়ুন

২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম দ্রুত শুরুর নির্দেশ ইউজিসির কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে প্রতি আসনের জন্য লড়বেন ২৩ ভর্তিচ্ছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ‘শর্তের প্যাঁচে’ আটকাবে শিক্ষার্থীরা

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনার মধ্যেও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ২৯ মে কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা হয়েছিল। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীরা ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। মহামারির মধ্যেও সেবার ১৫ সেপ্টেম্বর কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছিল।

২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সেই বছরের ব্যাচ অর্থাৎ, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছিল কৃষি গুচ্ছ ভর্তি কমিটি। একই বছরের ৮ আগস্ট ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। অর্থাৎ, এইচএসসির ফল প্রকাশের পাঁচ মাসের মধ্যেই কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা হয়।

অথচ ২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল একই বছরের ২৬ নভেম্বর প্রকাশ করা হলেও ১১ মাসেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারছেন না এ ব্যাচের ভর্তিচ্ছুরা। তারাই মূলত ভর্তি পরীক্ষাজটের বিড়ম্বনায় পড়েছেন।

কৃষি গুচ্ছ ভর্তি কমিটির বর্তমান সভাপতি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে দায়িত্ব পেয়েছি। তারপর সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছি। এর বেশি কিছু বলা আমার পক্ষে সমীচীন নয়।’

ভর্তি পরীক্ষাজট তৈরিতে কারও দায় নেই, পরিস্থিতির সৃষ্টি বলে মনে করেন কৃষি গুচ্ছ ভর্তি কমিটির আগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম লুৎফুল আহসান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি গুচ্ছের নেতৃত্ব পেয়েছিল। আমি উপাচার্য হিসেবে ভর্তি কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম। সেপ্টেম্বরে আমি উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। একই সঙ্গে কমিটি থেকেও সরে গেছি। জুলাই-আগস্টে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে বেশি দেরি হয়ে গেছে। এখানে কারও দায় নেই, এটা পরিস্থিতির সৃষ্টি।’

আরও পড়ুন

গুচ্ছ ভর্তিতে ‘এক গুচ্ছ’ সংকট বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়ও কোটা সংস্কারের দাবি দেশের তৃতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ বিভাগের একজন অধ্যাপক জাগো নিউজকে বলেন, ‘কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোতে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক বিষয় বেশি। সেজন্য জট হলে চাইলেই সিলেবাস কমিয়ে বা অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে দ্রুত তা কাটানো যায় না। ভর্তি পরীক্ষা যথাসময়ে নিয়ে ক্লাস শুরু করাটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে আরও বেশি জরুরি। আমি মনে করি, ভর্তি কমিটি সক্রিয়ভাবে কাজ করলে আরও দ্রুত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব।’

‘জুনে পরীক্ষা হবে, হলো না। এরপর জুলাইয়েও হলো না। আরও কয়েক দফা তারিখ ঘোষণা করেও পরীক্ষা হয়নি। এভাবে বারবার তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় পড়াশোনায় মন বসে না। এতে প্রস্তুতিতে পিছিয়ে যেতে হয়।’- পরীক্ষার্থী এজাজ আহমেদ

কী করবে বুঝে উঠতে পারছেন না ভর্তিচ্ছুরা

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন এজাজ আহমেদ। জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর তার পছন্দ ছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অথবা শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)। ঢাবি ও বুয়েটে চান্স না পেয়ে কৃষি গুচ্ছের জন্য অপেক্ষায় তিনি। তার সেই অপেক্ষা যেন ফুরোচ্ছেই না। প্রস্তুতি নিতে নিতে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বলেও জানান।

এজাজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘জুনে পরীক্ষা হবে, হলো না। এরপর জুলাইয়েও হলো না। আরও কয়েক দফা তারিখ ঘোষণা করেও পরীক্ষা হয়নি। এভাবে বারবার তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় পড়াশোনায় মন বসে না। এতে প্রস্তুতিতে পিছিয়ে যেতে হয়। এত দীর্ঘসময় ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে টিকে থাকা খুব কঠিন।’

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ দাবি বরিশালে স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও ৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য

ময়মনসিংহ মহানগরীর বাসিন্দা লতিফা হায়দার। মেয়েকে অন্য কোথাও ভর্তি পরীক্ষা দিতে দেননি তিনি। নিজ জেলায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় সেখানে মেয়েকে পড়াতে আগ্রহী লতিফা হায়দার। নিজেও বাকৃবি থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। তবে এবার ভর্তি পরীক্ষা নিতে দীর্ঘসূত্রতায় মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় তিনি।

লতিফা হায়দার জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেয়ে এইচএসসি পাস করেছে ২০২৩ সালে। হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ওদের ক্লাস শুরুর কথা। অথচ ভর্তি পরীক্ষাই এখনো হয়নি। পুরো একটা বছর মেয়েকে কোচিং করাচ্ছি, বাসায় নিয়ম করে পড়তে বসাচ্ছি। ওর তো আগ্রহ শেষ। আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। ওর বন্ধু-বান্ধবীরা সবাই ভর্তি হয়ে গেছে, ক্লাস করছে। এতে মন খারাপ ওর। যদি এখানেও ভর্তির সুযোগ না পায়, তাহলে তো কোনো উপায়ই থাকবে না। ভর্তি পরীক্ষায় এত দেরি মানা যায় না।’

‘করোনার সময় থেকে এইচএসসি ও ভর্তি পরীক্ষার সূচি এলোমোলো হয়ে পড়েছিল। সেটা কাটিয়ে উঠতে হয়তো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সেজন্য সেটা এখনো জিইয়ে আছে। তারপর জুলাই-আগস্টে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেজন্য আরও পিছিয়ে জট হয়ে গেছে।’- ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম

জট কাটাতে বিশেষ পদক্ষেপ নেবে ইউজিসি

স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর এপ্রিল ও মে মাসে সাধারণত এইচএসসি পরীক্ষা হয়। ৬০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ, জুলাইয়ের শেষ দিকে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হয়। তারপর একই বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তি সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

শিক্ষাবর্ষ মেনে বছরের শুরুতে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নবীন শিক্ষার্থীদের স্নাতক প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়। অর্থাৎ, কেউ যদি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন, তাহলে তার ক্লাস শুরুর কথা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। এসময় থেকে যতটা পেছাবে ততটা সেশনজট বিবেচিত হবে। ভর্তি পরীক্ষাজট কাটিয়ে উঠতেই যখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হিমশিম, সেখানে সেশনজট কাটাবে কীভাবে—এমন প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তদারকির দায়িত্বে থাকা সংস্থা ইউজিসি বলছে তারা বিশেষ পদক্ষেপ নেবে। সংস্থার সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনার সময় থেকে এইচএসসি ও ভর্তি পরীক্ষার সূচি এলোমোলো হয়ে পড়েছিল। সেটা কাটিয়ে উঠতে হয়তো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সেজন্য সেটা এখনো জিইয়ে আছে। তারপর এবার জুলাই-আগস্টে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেজন্য আরও পিছিয়ে জট হয়ে গেছে।’

আরও পড়ুন

বিশ্বসেরা গবেষকের তালিকায় শেকৃবির চার শিক্ষক শিক্ষার্থীদের রংতুলিতে বদলে গেছে বাকৃবির দেয়াল

জট কাটাতে কী ধরনের বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে—প্রশ্নে ইউজিসি সচিব বলেন, ‘দ্রুত সাধারণ জিএসটি গুচ্ছ, কৃষি গুচ্ছ ও প্রকৌশল গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা কমিটি করে দেওয়া হবে। তারা যতটা সম্ভব পরীক্ষা আয়োজন করে ভর্তি সম্পন্ন করবে। ইউজিসি থেকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সহযোগিতা করা হবে।’

কৃষি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও আসন

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষায় ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিচ্ছে। মোট আসন তিন হাজার ৭১৮টি। সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবচেয়ে কম আসন কৃষি গুচ্ছে নতুন যুক্ত হওয়া কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টি চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর অনুমোদন পেয়েছে।

ভর্তি বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ১১৬টি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩৫টি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৯৮টি, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৪৮টি, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটিতে ২৭০টি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩১টি, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০টি, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০টি এবং কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০টি আসন রয়েছে।

এএএইচ/এমএমএআর/এমএস