আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারীরা নির্যাতিত হলেও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলো বেছে বেছে প্রতিবাদ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
Advertisement
তিনি বলেন, আজকে এখানে অনেকে বলছেন, তারা সবসময় নারী নির্যাতন বন্ধে কাজ করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন, আন্দোলন করেছেন। আমি বলবো, এটা সঠিক নয়। আপনারা সিলেক্টিভলি (বাছাই করে) কাজ করেছেন। বিএনপিতে ভোট দেওয়ায় নোয়াখালীতে এক নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল, সবার মনে আছে নিশ্চয়ই। তখন তো অনেক নারী অধিকার সংগঠন প্রতিবাদটুকুও করেনি, সোচ্চারও হয়নি। এমন বহু ঘটনা আমি দেখাতে পারবো।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ‘নাগরিক সমাজ: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক জাতীয় পরামর্শ সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে এ সভার আয়োজন করা হয়।
দেশে কর্মরত তিন শতাধিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও), নাগরিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্ম, নারী আন্দোলন, মানবাধিকার সংগঠন, সামাজিক উদ্যোক্তা এবং গবেষকদের ঐক্যজোট সিএসও অ্যালায়েন্স এ পরামর্শ সভার আয়োজন করে।
Advertisement
স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের মধ্যদিয়ে দেশের মানুষের মন-মানসিকতায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, দেশের জনগণের মানসপটে বিশাল পরিবর্তন এসেছে, সেটাকে বৈপ্লবিক পরিবর্তন বলতে হবে। আমার বাড়িতেও পরিবর্তন এসেছে। আমার স্ত্রীর মাথায়ও বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। আমাকে বলেছেন, কথাবার্তা সাবধানে বলবা। উল্টা-পাল্টা কোনো কাজ করা চলবে না। বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে, সেটা সবক্ষেত্রে। এটাই সত্য।
সব সেক্টরের লোকজনকে আত্ম-সমালোচনার দিকে এগোতে হবে এবং এর বিকল্প কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে এখানে সব সেক্টরের লোকজন আমরা বসেছি। পরামর্শমূলক কথা তুলে ধরছি। রাজনৈতিক সংস্কার, রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। মন খুলেই বলতে পারছি। এটাই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশের অর্জন। আমার তো মনে পড়ে না আগে কখনও আমরা এমন একসঙ্গে বসেছি। এনজিও, সিএসও, রাজনৈতিক নেতা, আইসিটি শিল্পের প্রতিনিধি, প্রাইভেট সেক্টর এমন একসঙ্গে বসে আলাপ হয়েছে বলে আমার মনে পড়ে না। এটা নিঃসন্দেহে নতুন এক বাংলাদেশ।
সিএসও অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক রাশেদা কে চৌধুরী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশীদ, পানিসম্পদ এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিটির প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।
এএএইচ/এমএএইচ/জেআইএম
Advertisement