ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিএনপি নেতার নাম ব্যবহার করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নবনির্মিত একটি ভবন দখলের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের পক্ষ থেকে দখলমুক্ত করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
কিন্তু বিএনপি নেতা নূর হোসেন মোল্লা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে সরকারি ভবনসহ আরও জায়গা দখল করে নতুন ঘর তৈরি করছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
জানা গেছে, সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারি ভবন ও জায়গা দখল মুক্ত করার জন্য বিএনপির নেতা নুর হোসেন মোল্লাকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের কথা ও চিঠির কর্ণপাত না করে সরকারি ভবন দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ ও সরকারি জায়গা দখল করে টিনের ঘর নির্মাণ কাজ চলমান। ২২ আগস্ট চিঠি দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। চিঠির অনুলিপি ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙ্গা-টেকেরহাট মহাসড়কের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও হাসপাতালের পাশে সাইড অফিস হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রায় এক বছর ধরে ছোট একটি ভবন নির্মাণ করেছিল সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ভবনের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
Advertisement
কিন্তু ১৮ আগস্ট বিএনপি নেতার পরিচয়ে নূর হোসেন মোল্লা ভবনটিতে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন। এরপর ভবনের কিছু অংশ ভেঙে চারটি দোকান ঘর নির্মাণ করেন।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস সহকারী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় সাইড অফিস হিসেবে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। সরকার পরিবর্তনের পর নূর হোসেন বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে আমাদের ভবনটি দখল করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন। এরপর ভবনটির কিছু অংশ ভেঙে চারটি দোকান নির্মাণ করেন। আরও কিছু জায়গা দখল করে টিনের ঘর নির্মাণ করছেন। তাকে মৌখিকভাবে নিষেধ করা হয়েছে ও চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই তিনি কর্ণপাত করছেন না।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত নূর হোসেন মোল্লা বলেন, দখলের অভিযোগ সঠিক নয়। ওই জায়গায় আমরা প্রায় ৬০ বছর ধরে দোকান ঘর তুলে ভোগ দখল করে আসছি। সড়ক ও জনপদ বিভাগের লোকজন আমার জায়গা দখল করে অফিস বানিয়েছে। জায়গা যেহেতু আমার, সেহেতু ভবনটিও আমার।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম বলেন, নূর হোসেন মোল্লা উপজেলা বিএনপির সদস্য। ওই এলাকায় নুর হোসেনের বাপ-দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি ছিল যা হাসপাতালসহ সরকারি অফিসের জন্য দান করা। তবে এটা দলীয় কোনো বিষয় নয়। এটা তার ব্যক্তিগত এবং সরকারি বিষয়। সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
Advertisement
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কুদরত এ খোদা বলেন, ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের কোনো চিঠি এখন পর্যন্ত পাইনি, হয়তো অফিসে দিয়ে যেতে পারে। তবে সরকারি ভবন ও জায়গা দখলকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের মাদারীপুর জোনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গার ওপর একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। অফিসের টাকায় আমাদের সাইড অফিসের জন্য ভবনটি নির্মাণ হয়। আগস্টের শেষের দিকে বিএনপির এক নেতা পরিচয়ে ভবনটি দখল করে। সেই ভবনের সামনের অংশ ভেঙে তিনি-চারটি দোকান তৈরি করেছে। তিনি নতুন করে আমাদের জায়গা দখল করে আরেকটি টিনের ঘর নির্মাণ করছেন। এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/এএসএম