নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে মেয়েকে (২৬) কুপ্রস্তাব দেওয়াসহ উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মাকে (৫০) গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দুই বখাটের বিরুদ্ধে। এসময় ওই নারীকে শিকলে বেঁধে বেদম মারধরসহ বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়।
Advertisement
বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাত ৮টায় মুছাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নজির মাঝি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত বখাটে মো. রিয়াদ (২৩) ও মো. মেহরাজের (২৪) বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
আসামি রিয়াদ মুছাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নজির মাঝি বাড়ির ওলি উল্যাহ প্রকাশ লিটনের ছেলে এবং মেহরাজ একই বাড়ির সাহাব উল্যাহ প্রকাশ কালার ছেলে। এরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অন্যদিকে ভুক্তভোগীরা ওই বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা এক সন্তানের জননী মেয়েকে ঘরে একা পেয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়াসহ উত্ত্যক্ত করেন বখাটে রিয়াদ ও মেহরাজ। এ ঘটনায় তার মা প্রতিবাদ করলে তাকে ধরে নির্জন পুকুর পাড়ে নিয়ে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে রক্তাক্ত করা হয়। একপর্যায়ে বখাটেরা ওই নারীকে বিবস্ত্র করে মোবাইলে ছবি-ভিডিও ধারণ করেন।
Advertisement
প্রতিবেশী কাজি সফিকুল হাসান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ’অভিযুক্তরা বুধবার সন্ধ্যায় মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে বাধা দেওয়ায় তার মাকে ধরে নিয়ে পুকুরপাড়ে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। খবরে পেয়ে প্রতিবেশী আবদুর রহিম লোকজনসহ গিয়ে শিকল খুলে মা-মেয়েকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।’
ভুক্তভোগী নারীর ছেলে (২৫) জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা তিন ভাই ও বাবা বিভিন্ন খামারে চাকরি করি। বাড়িতে মা ও অসুস্থ বোন একা ছিল। তিন মাস আগে অস্ত্রোপচার করে বোনটির বাচ্চা হয়েছে। বখাটেদের আচরণ সহ্য করতে না পেয়ে চিৎকার করলে তারা আমার মাকে গাছে বেঁধে অকথ্য নির্যাতন করেছে। আমি এর বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। আসামির স্বজনরা এখন হুমকি দিচ্ছেন। এলাকা ছাড়া করারও হুমকি দিচ্ছেন। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।’
মুছারপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জাকার হোসেন রাশেদ জাগো নিউজকে বলেন, বুধবার রাতে ওই বাড়িতে গণ্ডগোল হওয়ার কথা লোকমুখে শুনেছি। তবে কেউ জানাননি। আমি দোকান করি। ব্যস্ত থাকায় নিজে গিয়ে খোঁজখবর নিতে পারিনি।
Advertisement
কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুস সুলতান জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে ভুক্তভোগীরা থানায় এসেছেন। এজাহারে কিছুটা অসঙ্গতি থাকায় ঠিক করে আনতে বলেছি।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/জিকেএস