আজ মানে বৃহস্পতিবার আসবেন না। সাকিব আল হাসানের কি আপাতত মানে আগামী দুইদিনের মধ্যে দেশে ফেরার কোনো সম্ভাবনা আছে? দুইদিনের কথা বলা এই কারণে যে, আগামী ২১ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ আর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম টেস্ট।
Advertisement
ওই টেস্ট খেলতে হলে অন্তত ১৯ অক্টোবর রাতের মধ্যে আসতে হবে সাকিবকে। ২০ অক্টোবর দেশে ফিরে নিশ্চয়ই পরদিনই পাঁচদিনের ম্যাচ খেলতে নেমে পড়তে পারবেন না তিনি। সাকিব কি আসলেই আসবেন?
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক খবর নেই। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ছয়টায় কৌতুহলী সাংবাদিকদের উপস্থিতি ছিল। সবার লক্ষ্য একটাই, সাকিব ইস্যুতে বিসিবির অফিসিয়াল বক্তব্য জানা। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নামার আধ ঘণ্টা পরও বিসিবি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু জানানো হয়নি। বিসিবি মিডিয়া উইং থেকে কোনো প্রেস রিলিজ দেওয়া হয়নি। এর বাইরে বোর্ড কর্তাদের কেউ মুখেও কোনো কিছু বলেননি।
যদিও আগেই জানা, বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন আইসিসির মিটিংয়ে অংশ নিতে দুবাই অবস্থান করছেন। তারা দেশে না ফেরা পর্যন্ত বিসিবির কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য-বিবৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
Advertisement
এদিকে ক্রিকেট পাড়ায় জোর গুঞ্জন, সাকিব আপাতত আর ঢাকা আসছেন না। তার পরবর্তী গন্তব্য নিয়ে সংশয়ে সাকিব নিজেও। 'ক্রিকইনফো'কে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি পরবর্তী সময়ে কোথায় যাব জানি না। তবে এটুক অনেকটাই নিশ্চিত, দেশে ফিরছি না।’
ভেতরের খবর, সাকিব ঢাকার ফ্লাইট বাতিল করে এখন আবুধাবি চলে গেছেন। বাংলাদেশ সময় পড়ন্ত বিকেলে দুবাই থেকে আবুধাবি গেছেন সাকিব। আগামী নভেম্বর মাসে আরব আমিরাতের টি-টেন খেলবেন সাকিব। যে দলে খেলবেন, সেই দলের মালিকের সাথেই তিনি গেছেন আবুধাবিতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিসিবি পরিচালক পর্ষদের জুম মিটিং ছিল। সেখানে সাকিবের দেশে ফেরা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলা নিয়েও আলোচনা হয়। তবে কেউ তা নিয়েও মুখ খোলেননি।
তবে আশপাশের সূত্রের খবর, সাকিবের ব্যাপারে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে কোনোরকম ইতিবাচক নির্দেশনা না পেলে বিসিবি ঝুঁকি নেবে না। সবুজ সঙ্কেত না পেলে বিসিবি যেচে সাকিবকে দেশে ফেরার কথা বলবে না।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের চারপাশ উত্তপ্ত ছিল সাকিব বিরোধীদের মুহূর্মুহূ স্লোগান ও সরব উপস্থিতিতে।
Advertisement
মিরপুর ছাত্র জনতার ব্যানারে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বরাবরে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। সে স্মারকলিপিতে সাকিবকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর, জুয়ারি আখ্যা দেয়ার পাশাপাশি আল্টিমেটামও প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি।
যদি সাকিবকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ দেওয়া না হয়, আর সাকিব দেশে ফেরার পর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে; তবে তার দায় বিসিবি সভাপতির বলে সতর্ক করেছেন আন্দোলনকারীরা।
এমন বিস্ফোরণমুখ অবস্থায় সাকিবকে দলে রেখে টেস্ট আয়োজনে আছে রাজ্যের ঝুঁকি। সাকিব খেললে পরিস্থিতি আরও জটিল, ঘোলাটে আর ব্যাপক হয়ে ওঠার জোর সম্ভাবনা থাকবে।
ছাত্র জনতার হুঁশিয়ারি না শুনলে এ আন্দোলন তীব্রতর ও ব্যাপক হতে পারে। তখন নিরাপত্তার কারণে টেস্ট ম্যাচটিই হুমকির মধ্যে পড়বে। এরকম পরিস্থিতিতে সরকার ও বিসিবির সাকিবকে টেস্ট খেলার সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
কাজেই সাকিবের শেষ ইচ্ছে পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে গেছে। বিসিবি ও সরকারের ইচ্ছে থাকলেও হয়তো তাকে দেশে ফেরার সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হবে না। সেক্ষেত্রে সাকিব কবে ফিরবেন কিংবা আদৌ দেশে ফিরতে পারবেন কিনা, জাতীয় দলের জার্সি আর গায়ে চড়াতে পারবেন কিনা; সেটি নিয়েই আছে রাজ্যের সংশয়।
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস