পাঁচ বছর বয়সী মনো বাড়ৈ ও ১৩ বছর বয়সী রাখি বাড়ৈ। অন্য শিশুরা যখন খেলাধুলায় মত্ত, ঠিক তখনই দুচোখে পৃথিবীর সব অন্ধকার নিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকে তারা দুই ভাই-বোন। কেননা জন্ম থেকেই অন্ধ ছোট ভাই মনো বাড়ৈ। আর পাঁচ বছর বয়সে চোখে পোকা গিয়ে চোখের আলো হারায় রাখি বাড়ৈ। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন মনো ও রাখির দিনমজুর বাবা-মা।
Advertisement
গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার তিলবাড়ি গ্রামের জুরান বাড়ৈ ও বিনা বাড়ৈ দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে দুই সন্তানই এখন অন্ধ। সন্তানের চোখের আলো ফেরাতে মাথা গোঁজার শেষ সম্বল ভিটেটুকুও বিক্রি করেছেন তাদের বাবা-মা। এখন বাস করছেন অন্যের ঘের পাড়ে। তাদের বাবা জুরান বাড়ৈ কয়েক বছর ধরেই কর্মক্ষম। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান মা বিনা বাড়ৈ। এভাবেই চলছে তাদের জীবন।
মনো ও রাখির চোখের আলো ফেরাতে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে রাজধানীর একটি চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। তবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ফিরে আসতে হয়েছে তাদের। তাদের চোখের আলো ফেরাতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন মনো ও রাখির বাবা-মাসহ এলাকাবাসী।
মনো ও রাখির বাবা জুরান বাড়ৈ বলেন, ‘আমার তিন সন্তানের মধ্যে দুই সন্তানই অন্ধ। চিকিৎসা করাতে গিয়ে ভিটেমাটি হারিয়ে এখন নিঃস্ব। এলাকাবাসী টাকা তুলে চিকিৎসার দায়ভার নিলেও পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় বন্ধ হয়ে আছে চিকিৎসা। সন্তানদের চিকিৎসা করাতে না পারার কষ্ট আমি কাকে দেখায়! আমার দুই সন্তান কি আর দেখতে পারবে না?’
Advertisement
তাদের মা বিনা বাড়ৈ বলেন, ‘আমাদের কিছুই নেই এখন। মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকুও হারিয়েছি চিকিৎসা করাতে গিয়ে। এখন অন্যের ঘেরপাড়ে বসবাস করছি। সমাজের বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ তারা যেন আমার সন্তানদের চোখে আলো ফেরাতে পাশে দাঁড়ান।’
মিল্টন নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘তাদের চোখে আলো ফেরাতে আমরা এলাকাবাসী উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সবাই মিলে চাঁদা তুলে যে টাকা সংগ্রহ হয়েছিল তার সবই শেষ হয়ে গেছে। যে কারণে এখন চিকিৎসা বন্ধ আছে।’
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা নিয়মানুযায়ী তাদের সহযোগিতা করবো।
এসআর/জিকেএস
Advertisement