দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন রাসেল টি আহমেদ।
Advertisement
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে বাধ্য হয়ে পদত্যাগের পথ বেছে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সংগঠনটির সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। যার অনুলিপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেড অর্গানাইজেশনেও পাঠিয়েছেন বেসিসের টানা দুই মেয়াদে নির্বাচিত এ সভাপতি। তিনি নিজেও জাগো নিউজকে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
রাসেল টিম আহমেদ ২৪ বছর ধরে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করছেন। গত ১২ বছর তিনি বিভিন্ন মেয়াদে বেসিসের কার্যনির্বাহী বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২-২৪ মেয়াদে প্রথম দফায় তিনি বেসিস সভাপতি নির্বাচিত হন। চলতি বছরের ৮ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে সভাপতির দায়িত্বগ্রহণ করেন।
Advertisement
আরও পড়ুন
পিএসসির চেয়ারম্যানসহ সব সদস্যের পদত্যাগপদত্যাগপত্রে রাসেল টি আহমেদ তার দুই মেয়াদকালে নিজের সাফল্যের ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন। নিচের দিকে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘দেশের ভীষণ সংবেদনশীল সময়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার পরিবর্তে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে। এতে আইসিটি খাতে অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন করে আসা বেসিসের সর্বশেষ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এতে বিশ্বে সফটওয়্যার শিল্পে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।’
পদত্যাগের কারণ জানিয়ে রাসেল টি আহমেদ উল্লেখ করেন, ‘শুধুমাত্র বেসিস সভাপতি আমি এ পরিচয়ের কারণে নিকট অতীতের নানা ঘটনায় আমাকে নামে-বেনামে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। সম্প্রতি আমাকে ও আমার সন্তানদের জড়িয়ে ভীতিকর মন্তব্যের মুখোমুখি হতে হয়েছে, যা আমার জন্য অকল্পনীয় এবং পরিবারের নিরাপত্তার জন্য আশঙ্কাজনক। এজন্য বেসিসের সভাপতি ও পরিচালনা বোর্ডের পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সফটওয়্যার খাতের সংগঠন বেসিসে বর্তমানে ২ হাজার ৬০০ সদস্য রয়েছেন। দুই বছর পর পর এ সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গত মে মাসে সর্বশেষ নির্বাচনে বোর্ড ও কার্যনির্বাহী (ইসি) গঠিত হয়।
Advertisement
সরকার পতনের পর বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার নেতাদের পদত্যাগের ঘটনা ঘটছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও এ অস্থিরতা দেখা গেছে। তবে বেসিস সভাপতি ও কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দালালি ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনের কার্যালয়ে যান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র। তারা সেখানে হট্টগোল শুরু করেন এবং বেসিস নেতাদের পদত্যাগ দাবি করেন।
এরপর থেকে মূলত বেসিসে অস্থিরতা শুরু হয়। বেসিসের সাবেক একজন সভাপতিকে সম্প্রতি হত্যা মামলায় গ্রেফতারও করেছে ডিবি পুলিশ। তাছাড়া বেসিস নেতারা তাদের অবস্থান জানাতে এবং সাবেক সভাপতিকে গ্রেফতার ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বুধবার (১৬ অক্টোবর) প্রতিবাদ সভা ডাকেন। তবে শেষ মুহূর্তে সেই প্রতিবাদ সভা স্থগিত করা হয়। এরপর আজ পদত্যাগ করলেন বেসিসের আলোচিত সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।
এএএইচ/ইএ/এএসএম