দেশজুড়ে

ঋণ দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে উধাও

‘মাত্র ১০ হাজার টাকা জমা দিলেই সহজ শর্তে ঋণ পাবেন এক লাখ টাকা। আর তা পরিশোধ করতে পারবেন দুই বছর ধরে।’ এমন নানা প্রলোভন দেখিয়ে কয়েকশ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে উধাও হয়েছে একটি চক্র। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনন্দনপুরে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অফিসের বড় পদের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা গোপনে চলে গেলেও নিচু পদের দুই কর্মীকে আটকে রাখেন গ্রাহকরা। পরে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, মাত্র এক মাস আগে রঘুনন্দনপুরে ফরিদপুর হাউজিং স্টেটে ছায়াবীথি-মমতা ভবনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ‘প্রত্যাশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) পরিচয়ে কার্যক্রম শুরু করে। তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ১০০ টাকার বিনিময়ে সদস্য সংগ্রহ করে। এরপর পাঁচ হাজার টাকা জমা দিলে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে এবং তা দুই বছরে পরিশোধ করার প্রলোভন দেখায়। তাদের প্রলোভনে পড়ে অনেকেই বিশ্বাস করে টাকা জমা দেন।

এভাবে গত এক মাস ধরে হাভেলি গোপালপুর, গোয়ালচামচ, রঘুনন্দনপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সমিতি গঠন করে ঋণ দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। ঋণ পাওয়ার আশায় অনেকে ধার করে টাকা দেন। কিন্তু টাকা নিয়ে চম্পট দেওয়ায় এখন বিপাকে পড়েছেন এসব পরিবারগুলো।

Advertisement

আটকে রাখা দুই কর্মচারী জানান, কর্মকর্তারা পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের আটকে রাখা হয়। তারাও ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রতারিত। নানা প্রলোভনে তাদের চাকরি দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে টাকা।

ওই প্রতিষ্ঠানটির সাইনবোর্ডে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৭৪/১৯৯৮ ইং লেখা থাকলেও সেটি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।

ভুক্তভোগী কামরুন্নাহার রোজি জানান, প্রতারক চক্র বৃহস্পতিবার ঋণ দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

এছাড়া ঋণ গ্রহণ বাবদ অগ্রিম ১০ শতাংশ টাকা গ্রহণ করে তারা। এদের মধ্যে আফরোজা বেগমের ৩০ হাজার ৬০০ টাকা, নুরুন্নাহারের ২০ হাজার ৬০০ টাকা, ও রুবিনা বেগমকে ৭ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে অনেকে কাছ থেকে টাকা নেয় চক্রটি।

Advertisement

এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে তিনজনের নাম উল্লেখসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়।

এরমধ্যে ‘প্রত্যাশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’র চেয়ারম্যান মো. বাবুল আকতার, ম্যানেজার মো. আরিফুল ইসলাম, সিনিয়র মাঠকর্মী ফেরদৌস আরাসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারী প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বলে থানায় অভিযোগ করা হয়। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফ জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। উদ্ধার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/জেআইএম