বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে আজ। এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কজলিস্টে (কার্যতালিকায়) তিনটি মামলা রয়েছে। তবে আসামির সংখ্যা কতো তা জানা যায় নি।
Advertisement
জানা গেছে এদিন আসামিদের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
চিফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গণহত্যার ঘটনায় করা মামলার বিচার করতে নিয়োগ পাওয়া ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতি যোগ দিয়েছেন। এখন অভিযোগ যাচাই-বাচাই ও তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজনে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আর্জিও জানানো হবে।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর তাজুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, আমরা বিচারের শুরুর দিন কয়েকটি আবেদন করবো। সে বিষয়ে এখনই ডিসক্লজ করছি না। এটি গোপন রাখাই ভালো।
Advertisement
বুধবার (১৬ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে বিচারপতিদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এজলাসে বসবেন।
আরও পড়ুন>>>
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন প্রয়োজনএর আগে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) নিয়োগের পর প্রথম কর্মদিবসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। এছাড়া ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী এদিন ট্রাইব্যুনালে আসেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ও অন্য কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান।
গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। আইন সচিব শেখ আবু তাহেরের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ (১৯৭৩ সালের আইন নং ২১)-এর ধারা ৬-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হলো। এছাড়া হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীকে ওই ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো।
Advertisement
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান। গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে।
স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে।
এফএইচ/এসআইটি/জেআইএম