একটি প্রকল্পের আওতায় প্রায় সোয়া ১৫ কোটি টাকার সার্ভার ও ইউপিএস কেনার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক শুধাংশু শেখর ভদ্রকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করার কথা জানায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
তবে তিনি যে উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে ছিলেন সে কথা দুদকের সংশ্লিষ্টরা জানতেন না।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে শুধাংশকে দুদকে আনা হয়। এসময় তিনি যে জামিনে আছেন তা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানালে দুদক কর্মকর্তা জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তাকে আদালতে সোপর্দ না করে ছেড়ে দেন।
বুধবার রাতে দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ডাক অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক শুধাংশু শেখর ভদ্রকে দুদকের মামলায় গ্রেফতারের সময় তিনি যে হাইকোর্ট থেকে দুই মাসের আগাম জামিনে আছেন তা জানাননি। দুদকে আনার পরে তার জামিনের বিষয়টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানালে জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তাকে আদালতে সোপর্দ না করে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
Advertisement
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাতে দুদকের মামলায় উপ-সহকারী পরিচালক নাজির আকন্দ অভিযান চালিয়ে শুধাংশ শেখরকে গ্রেফতার করেন। গত ২০ আগস্ট একটি প্রকল্পের ১৫ কোটি ১১ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক শুধাংশু শেখর ভদ্র এবং ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
আরও পড়ুনডাক বিভাগের সাবেক ডিজি শুধাংশু গ্রেফতারশুধাংশু শেখর ভদ্রকে দুর্নীতি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২০ সালে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল।
তার আইনজীবি মিন্টু কুমার মন্ডল বলেন, ‘শুধাংশকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি জামিনে আছেন। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়টি অবহিত করা হলেও দুদক অফিস থেকে তাকে ছাড়া হয়নি। পরে বিভিন্ন পরিস্থিতি বিবেচনা করে যেহেতু তিনি উচ্চ আদালত ও ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে জামিনে আছেন, তা জানার পর তারা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। জর্জ কোর্ট পর্যন্ত নিয়েও কোর্টে উপস্থাপন না করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিকেল ৪টার সময় তাকে তার ছেলের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধাংশু গত ২ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছিলেন। জামিনে থাকা অবস্থায় রাতে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। পরে আমি জানার পর দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানাই তিনি জামিনে আছেন, তাকে কেন গ্রেফতার করলেন। কিন্তু কোনো অনুরোধের তোয়াক্কা না করে তাকে হাতকড়া পরিয়ে দুদকে নেওয়া হয়।’
Advertisement
দুদকের সহকারী পরিচারক মো. আবুল কালাম আজাদ গত ২০ আগস্ট শুধাংশু শেখর ভদ্রের বিরুদ্ধে ওই মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘পোস্ট-ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৫ কোটি ১১ লাখ ৪২ হাজার টাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিফোন শিল্প সংস্থা থেকে ৫০০টি এইচপি সার্ভার এবং উইনার ইউপিএসসহ অন্যান্য ইলেট্রেনিক সামগ্রী কেনা হয়। পরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডাকঘরগুলোতে বিতরণ করা হয় সেসব সরঞ্জাম।
এসএম/ইএ/জেআইএম