‘অভিনয় করার জন্য একজীবনে অনেক কিছু ত্যাগ করেছি, অনেক। মানে স্ট্রাগলটা ভাষায় বোঝাতে পারবো না। সারাজীবন আমি অভিনয় করতে চেয়েছি। ঘুমের মধ্যে, খেতে, বসতে – সব জায়গায়। যেটাকে বলা যায় অভিনয়ের সঙ্গে জীবনযাপন করেছি। আজ এই পদক অনেক কষ্টকেই ম্লান করে দিয়েছে। আমি আসলে কোনো কথা বলতে পারছি না আবেগে। আপনি সামনে থাকলে হয়তো আমি জড়িয়ে ধরতাম। বলতাম, ধন্যবাদ এ রকম ভালো খবর দেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন’। ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি একুশে পদক প্রাপ্তির খবর জেনে জাগো নিউজের কাছে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন অভিনেতা ও নাট্যকার মাসুম আজিজ। শিল্পকলায় অবদানের জন্য তাকে এ স্বীকৃতি দিয়েছিল সরকার। সেই প্রাপ্তিতে সারল্য ভরা আবেগে কেঁদেছিলেন অভিনেতা।
Advertisement
পর্দাজীবনেও মাসুম আজিজের কান্না ছুঁয়ে গেছে বহু দর্শকের হৃদয়। অনুরাগীদের কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন একুশে পদকপ্রাপ্তির ওই বছরেই। ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর ক্যানসারে আক্রান্ত মাসুম আজিজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যবরণ করেন। আজ তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
এই শিল্পীর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে তার পৈত্রিক নিবাস পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় রয়েছে দোয়া মাহফিল। এলাকায় এতিমদের খাওয়ানোর পাশাপাশি শিল্পীকে স্মরণ করা হবে আলোচনা সভায়, জানিয়েছে তার পরিবার।
মাসুম আজিজের জন্ম ১৯৫৩ সালের ২২ অক্টোবর হবিগঞ্জ বানিয়াচংয়ে। তার বাবা আখতারুজ্জামান এবং মা সৈয়দা আজিজা সুলতানা। তাদের আদি নিবাস পাবনায়। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিলেন তিনি।
Advertisement
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন থিয়েটারে কাজ শুরু করেন। ১৯৮৫ সালে প্রথম টিভিনাটকে অভিনয় করেন। হুমায়ূন আহমেদের ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’, সালাহউদ্দিন লাভলুর ‘তিন গ্যাদা’সহ বহু নাটকে দেখা গেছে তাকে। ‘ঘানি’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ২০০৬ সালে পার্শ্ব চরিত্রের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে রাইসুল ইসলাম আসাদের সঙ্গে যৌথভাবে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হয়। ‘গহীনে শব্দ’, ‘এই তো প্রেম’, ‘গাড়িওয়ালা’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনয় ছাড়াও মাসুম আজিজ চিত্রনাট্যকার ও নির্মাতা হিসেবে সমাদৃত। সরকারি অনুদানে ‘সনাতন গল্প’ নামের ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন তিনি। ছবিটি ২০১৮ সালে মুক্তি পায়।
এলএ/আরএমডি/জেআইএম
Advertisement