রাজনীতি

ভারত সরকারের বক্তব্য গভীর মাস্টারপ্ল্যানের অংশ: রিজভী

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বক্তব্যকে ‘শুধু অনভিপ্রেত নয়, গভীর মাস্টারপ্ল্যানের অংশ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

Advertisement

তিনি বলেন, দেশ নিয়ে চক্রান্ত থেমে নেই। সালমান এফ রহমানের মতো বড় সাপের থেকেও বিষধর ছোট সাপ তথা আওয়ামী সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা এখনো বহাল তবিয়তে সিন্ডিকেটবাজি করে যাচ্ছে। এদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। তাদের গ্রেফতার করতে হবে।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গোড়ানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চক্রান্ত চলছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, চক্রান্ত ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। অনেক ষড়যন্ত্র চক্রান্ত চলছে। এবারের দুর্গাপূজায় কোথাও কি অশান্তি হয়েছে? কোনো অশান্তি হয়নি। বিএনপি এবং তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পাহারা দিয়েছে। এমনকি আমাদের দেশের মাওলানা যারা হুজুর তারাও মণ্ডপ পাহারা দিয়েছে।

Advertisement

এদেশে হিন্দু-মুসলমান যুগ যুগ ধরে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে যারা আশ্রয় দিয়েছেন তারা অপেক্ষায় থাকেন কী করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নেই এই কথাটি বলা যায়।

রিজভী বলেন, সাতক্ষীরার একটি পূজামণ্ডপ থেকে কে জানি মুকুট চুরি করেছ। এখানে তো বক্তব্য আছে। ঠিক আড়াইটার দিকে ওই মন্দিরের যিনি প্রধান পুরোহিত এবং আরও যারা কর্মকর্তারা ছিলেন তারা হঠাৎ করে উঠে গিয়েছিলেন কিন্তু কেন? এটাতো বড় প্রশ্ন। এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটা প্রতিবাদ জানাবে যে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে আমরা সংশয়ে আছি।

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের কোনো মন্দিরে কোনো পূজামণ্ডপে একটি গাছের পাতাও পড়েনি। আর আপনি (ভারত) সেই দিল্লি থেকে বলে দিলেন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের কথা। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য শুধু অনভিপ্রেত নয়, এটি একটি গভীর মাস্টারপ্ল্যানের অংশ।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব আরও বলেন, এত সুন্দর একটি পূজা উৎসব হয়ে গেল তারপরও আপনারা বলেছেন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আপনারা উদ্বিগ্ন। আমি ভারতের নীতি-নির্ধারকদের উদ্দেশে বলতে চাই, পশ্চিমবাংলার বর্ধমান একটি জেলা ওটাও আরেকটি বাংলা যেটা ভারতের মধ্যে সেইখানেও এই রকম একটা ঘটনা হয়েছে, মুকুট চুরি! কই সেই বিষয়ে তো দিল্লির নীতিনির্ধারকরা কোনো কথা বললেন না। ওখানকার পররাষ্ট্র দপ্তর তো একটা বিবৃতি দিল না। আপনাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা আপনাদের পদতলে রাখতে চান। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আপনারা নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে চান। যেমন আপনারা শেখ হাসিনার মাধ্যমে রেখেছিলেন। সেটা হাতছাড়া হয়ে গেছে।

Advertisement

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনারা সতর্ক থাকুন। ভয়ঙ্কর, ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র চক্রান্ত হবে। শেখ হাসিনা বসে নেই। ভিডিওতে তার বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। তিনি বলেছেন- আমি বাংলাদেশের কাছেই আছি। গোপালগঞ্জে যদি কেউ কিছু করতে আসে তাহলে তার হাত গুড়িয়ে দাও। তার কথার মধ্যে কিন্তু শান্তির কথা নেই, স্বস্তির কথা নেই। তিনি যে এত শিশু-কিশোর বাচ্চাদের হত্যা করলেন তারপরও তার মধ্যে কিন্তু কোনো অনুশোচনা নেই। এখনো তার মনের মধ্যে দখলদারত্বের মনোভাব। এ ধরনের একজন ঘাতক নারীকে আশ্রয় দিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ।

মন্থর গতিতে চলতে থাকা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডেঙ্গু প্রতিরোধে পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করতে চূড়ান্ত ব্যর্থ বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে ও বিএনপি নেতা ইউনুস মৃধার সঞ্চালনায় লিফলেট বিতরণকাল কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিব, ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, আরিফুর রহমান তুষার, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত ও ছাত্রদল নেতা আউয়াল প্রমুখ।

কেএইচ/এমকেআর/এমএস