নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী কাজ শুরু করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন কেন? দেশের ছাত্র, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ গত তিনটা নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। ভোট দেওয়ার আশায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের আশায় ফ্যাসিবাদ হাসিনাকে বিদায় করেছে তারা। তাই কবে, কোন দিন নির্বাচন দেবেন দিন-তারিখ ঠিক করে কাজকাম শুরু করেন। তাহলে একটা ফলাফল পাওয়া যাবে।’
‘যদি না বলেন (দিন-তারিখের কথা) তাহলে দেশের মানুষের মধ্যে অনাস্থা সৃষ্টি হবে। সেটা দেশের জন্য, সরকারের জন্য, দেশের মানুষের জন্য- কারও জন্যই ভালো হবে না।’ বলেন এই বিএনপি নেতা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’র উদ্যোগে ‘সীমান্তে হত্যা বন্ধ, ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচারের দাবি এবং লুট হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবিতে’ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
Advertisement
দুদু বলেন, ‘যারা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছেন তাদের হাতে বেশি সময় আছে বলে আমার মনে হয় না। যারা ভারতে পালিয়ে গেছে তারা বাদে আমি, আমার দল, আমার নেতা এবং দেশে ছোট-বড় যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে তারা সমর্থন দিয়েছে এবং এখনো দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, আইন-শৃঙ্খলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ভোট এবং ভাতের অধিকারের প্রতিষ্ঠা হবে এই স্বপ্ন নিয়ে দেশের জনগণ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগকে পরাজিত করেছে। ভাত এবং ভোটের অধিকার দেশের মানুষের জন্মগত অধিকার।’
তিনি বলেন, ‘যারা নির্বিচারে ছাত্র, শ্রমিক ,মেহনতি মানুষকে হত্যা করেছে, সেই সব হত্যাকারীদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এই সরকার জাতিকে আশ্বাস দিয়েছিল, বিচার করবে।’
আরও পড়ুনসংস্কার করেন কিন্তু ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া ঠিক হবে নাশেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারে এত বড় বড় চোর হবে এটা কেউ বিশ্বাস করেনি মন্তব্য করে কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, ‘যাকে জাতির পিতা দাবি করা হয়। তার পরিবারে এত বড় বড় চোর তৈরি হবে এটা দেশের মানুষ আশা করেনি। তার (শেখ মুজিবুর রহমানের) দুটি কন্যাসন্তান বেঁচে আছে। এই দুই পরিবারের একটা সন্তান নেই যারা টাকা চুরি করেনি। সেই টাকা ভারত, অস্ট্রেলিয়া, লন্ডনসহ এমন কোনো জায়গা নেই যে পাচার করেনি। সেই টাকা ফেরত আনতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার কাজ শুরু করেন। যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের বিচারকাজ শুরু করেন। আপনারা শুরু করেন, বাকি কাজ পরবর্তী সময় যারা নির্বাচিত সরকার আসবে তারা শেষ করবে। কথায় আছে সময়ের এক ফোঁড়,অসময়ের দশ ফোঁড়। সময়ের কাজ সময় করতে হবে।’
Advertisement
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ড. ইউনূস অত্যন্ত বিচক্ষণ লোক। দেশে-বিদেশে তার অনেক প্রশংসা আছে। তিনি দেশের যে কাজ হাতে পেয়েছেন, আমি বিশ্বাসী তিনি এটা শেষ করতে পারবেন। এজন্য আমরা ওনাকে সমর্থন করেছি। কিন্তু কোনো জিনিস অনন্তকাল পর্যন্ত চলতে পারে না। তার একটা সময়সীমা আছে। নির্দিষ্ট গণ্ডি আছে, তার মধ্যে শেষ করতে হবে। যদি শেষ করতে না পারেন তাহলে দেশের জনগণ গত ১৬ বছর ধরে ভাত, ভোট এবং গণতন্ত্রের জন্য যে আন্দোলন চালিয়েছে, সেটা চলতে থাকবে।’
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রেসিডেন্ট লায়ন ফারুক রহমান, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, সাবেক এমপি জ্যোতি, কৃষকদল নেতা এস কে সাদীসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
কেএইচ/ইএ/জেআইএম