জাতীয়

কমিশনের পরামর্শে কারাগারকে সংশোধনাগারে পরিণত করার কার্যক্রম শুরু

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালের আইনের ক্ষমতাবলে দেশের কারাগার বা সংশোধনাগার, হেফাজত ইত্যাদি স্থান পরিদর্শন করে সরকারকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে আসছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন জানায়, দেশের বিভিন্ন জেলায় কারাগার পরিদর্শন করে সরকারকে সুপারিশ করা হয়েছে। সম্প্রতি কারা অধিদপ্তর একটি সভায় কমিশনের সুপারিশসমূহ মোতাবেক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

Advertisement

এতে আরও বলা হয়, কারাগার পরিদর্শনকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কারাবন্দীদের অধিকার, বন্দী ব্যবস্থাপনা, আবাসনের মান, খাবারের মান, স্বাস্থ্যসেবা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা-ব্যবস্থা, কারাগার কর্তৃপক্ষের নেওয়া প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, কারাবন্দীদের অপরাধমূলক মানসিকতা পরিবর্তনের মাধ্যমে সংশোধনের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণসহ কারাগারের সামগ্রিক পরিবেশ পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে।

কমিশন পরিদর্শনকালে সরেজমিন কারাবন্দীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সার্বিক সুরক্ষার জন্য সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনে। পাশাপাশি কারাবন্দীদের তাদের আইনগত অধিকার সম্পর্কে অবহিত করে। পরবর্তীকে সার্বিক বিষয় বিবেচনাপূর্বক সরকারকে সুপারিশ করে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিশন মনে করে দেশের কারাগারগুলোকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করে সংশোধনাগারে পরিণত করা একান্তই প্রয়োজন।

Advertisement

এ বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কারাগারগুলো সংশোধনাগারে রূপান্তরিত করতে সঠিক পদ্ধতিতে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। কারাগারে বন্দীদের মধ্যে নিয়মিত শুদ্ধাচার ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে অপরাধ সম্পর্কে উপলব্ধি ও অনুতপ্ততার পরিবেশ তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এ ক্ষেত্রে শুদ্ধাচার চর্চা অব্যাহত রেখে তাদের উৎপাদনমুখী কাজে নিয়োজিত রাখলে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়। কারাগারে সুন্দর পরিবেশ, উন্নত খাদ্য, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও কয়েদিদের সব অধিকার গুরুত্ব দিতে হবে।

কারাগারের পাঠাগারগুলোও সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, পাঠাগারগুলো মানবিক চরিত্রের বিকাশ এবং উন্নত পরিবেশ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

জানা গেছে, সম্প্রতি কারা অধিদপ্তরের একটি সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কারাগার পরিদর্শন প্রতিবেদনসমূহের পরামর্শ ও সুপারিশের আলোকে কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে কারা অধিদপ্তর ও সুরক্ষা সেবা বিভাগ কর্তৃক মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের সম্পর্কে একটি বছরভিত্তিক বিশেষ ডাটাবেজ তৈরিকরণ, কারা অধিদপ্তর কর্তৃক মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের পুনর্বাসনের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ, উক্ত প্রকল্পের বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের সহযোগিতার বিষয়টি বিবেচনা করা ইত্যাদি।

সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে সেগুলো ইতিবাচক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে কমিশন মনে করে। কমিশন বিশ্বাস করে গৃহীত সুপারিশসমূহ দ্রুতই কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হবে এবং মানবাধিকার সুরক্ষায় তা তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।

Advertisement

এসএম/এমআইএইচএস/এএসএম