রক্তে ছড়িয়ে পড়েছে ইনফেকশন, বেড়েছে শ্বাসকষ্ট। সংকটাপন্ন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সুরস্রষ্টা সুজেয় শ্যামের জীবন। তার জন্য আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) খুঁজছেন মেয়ে লিজা সুজেয় শ্যাম। এই অসময়ে আইসিইউ খুঁজতে বেগ পেতে হচ্ছে তাকে।
Advertisement
দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছেন সুজেয় শ্যাম। গত চার মাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। আজ (১৫ অক্টোবর) মঙ্গলবার সকাল থেকে তার অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আসন পাওয়া হয়ে পড়েছে দুষ্কর, জানালেন উদ্বিগ্ন কন্যা।
আরও পড়ুন: হাসপাতালেই ফিরতে হচ্ছে সুজেয় শ্যামকেআজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন সুজেয় শ্যামলিজা শ্যাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকাল থেকে বাবার অবস্থা ভালো না। ডাক্তার বলেছেন আইসিইউতে নিতে। এখন পর্যন্ত আইসিইউতে সিট খালি পাইনি। তাই বাবাকে কেবিনেই রাখা হয়েছে। বাবার শরীর কয়েকদিন ধরে ভালো নেই। তার হার্টে পেসমেকার বসানো হয়েছিল। চিকিৎসকরা বলেছেন, সেখানে ইনফেকশন হয়েছে। ইনফেকশন রক্তেও ছড়িয়েছে। আগের চেয়ে শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। এমনিতেই বাবা ক্যানসারের রোগী। তার ডায়াবেটিসও অনিয়ন্ত্রিত, কিডনিতেও সমস্যাও আছে। এসব কারণে ট্রিটমেন্ট করার ক্ষেত্রে অনেক কিছু ভাবতে হচ্ছে ডাক্তারদের। তবে তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। সবার কাছে তার জন্য দোয়া চাই।’
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শেষ গান এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর প্রথম গানের সুর করেন সুজেয় শ্যাম। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গীতিকার শহীদুল আমিনের লেখা ‘বিজয় নিশান উড়েছে ওই’ গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন তিনি। গানটির প্রধান কণ্ঠশিল্পী ছিলেন অজিত রায়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সুজেয় শ্যামের অন্য গানগুলোর মধ্যে আছে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আহা ধন্য আমার জন্মভূমি’, ‘আয়রে চাষি মজুর কুলি’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’ ও ‘শোন রে তোরা শোন’। তার সুর করা গানগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জোগাতো।
Advertisement
সুজেয় শ্যাম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। কিছুটা সুস্থ অবস্থায় জানিয়েছিলেন, একুশে পদকের সঙ্গে পাওয়া টাকায় নিজের ক্যানসারের চিকিৎসা করছিলেন এই শিল্পী। তার বয়স প্রায় ৭৯ বছর।
এমআই/আরএমডি/জেআইএম