দেশজুড়ে

শতভাগ পাস, ১৩৯৫ পরীক্ষার্থীর ১১৮১ জনই পেলেন জিপিএ-৫

এইচএসসি পরীক্ষায় এবারও চমক দেখিয়েছে নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) প্রকাশিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রতিষ্ঠানটি থেকে অংশ নেওয়া এক হাজার ৩৯৫ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক হাজার ১৮১ জন। অর্থাৎ জিপিএ-৫ পাওয়ার হার ৮৪.৬৫ শতাংশ। এবারের ফলাফল গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুথানে নিহত, আহত ছাত্র-জনতাকে উৎসর্গ করেছেন পাস করা শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কলেজের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ ২০১২ সাল থেকে টানা তিন বছর ঢাকা বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। ২০১৫ সাল থেকে সেরাদের তালিকা না হলেও নিজেদের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখেছে। মঙ্গলবার সকালে ফলাফলের খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কলেজ প্রাঙ্গণে ছুটে আসেন। এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় মোট এক হাজার ৩৯৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক হাজার ১৮১ জন।

এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৯২৬ জন অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯১০ জন, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে ১৯১ জন অংশ নিয়ে ১২২ জন ও মানবিক শাখা থেকে ২৭৮ জন অংশ নিয়ে ১৪৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া মোহাইমিনুল কবির আফ্রাদ বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা চলাকালে দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সেখানে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। তাই আমরা এবারের ফলাফল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করলাম।’

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া প্রত্যাশা সাহা বলেন, ‘আমরা যদি সবগুলো পরীক্ষা দিতে পারতাম তাহলে হয়তো আরও ভালো ফলাফল করা সম্ভব হতো। তারপরও শিক্ষকদের নিয়মিত কঠোর ও সঠিক দিক-নির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস, বিশেষ ক্লাস, হোম ভিজিট, টিউটেরিয়াল ও মাসিক পরীক্ষার কারণেই ভালো ফলাফল করা সম্ভব হয়েছে।’

Advertisement

মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হাফসা বিনতে আমিন বলেন, ‘কলেজের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকসহ গাইড শিক্ষক নিয়মিত আমাদের বাসায় এসে সব বিষয়ে খোঁজখবর নিতেন। আমাদের প্রতিনিয়ত লেখাপড়ায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। যে কারণে আজ আমাদের এ সাফল্য।’

আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও থার্মেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাদির মোল্লা। তিনি বলেন, ‘আমাদের শতভাগ পাস করেছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমার নিরন্তর চেষ্টা আছে, আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের এবারের ফলাফল গত ৫ আগস্টে নিহত, আহত ছাত্র-জনতাকে উৎসর্গ করা হয়েছে।’ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেরেম উল্লাহ আহসান বলেন, ‘কলেজের এক ঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষকের সকাল থেকে শুরু করে মধ্যরাত অবধি নিরন্তর চেষ্টায় ধারাবাহিক এই সাফল্য। প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন দিক-নির্দেশক শিক্ষক রয়েছেন। ওই শিক্ষক শুধু লেখাপড়া নয়; তাদের খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, বিনোদন থেকে শুরু করে সব ধরনের চাহিদা পূরণে সবসময় শ্রম দিয়ে আসছেন।’

সঞ্জিত সাহা/এসআর/এমএস

Advertisement