বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শোক দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৮৫ সালের এদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের তৎকালীন টিভি রুমের ছাদ ধসে ৪০ জন নিহত হন।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল সাড়ে ৭ টায় শোক র্যালিসহ জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে জগন্নাথ হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনের টিভি কক্ষে উপাচার্যের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল, সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিবাস চন্দ্র মাঝি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি এবং চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অ্যালামনাইরা উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান নিহতদের বিনম্র চিত্তে স্মরণ করে বলেন, ১৫ অক্টোবরের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। বর্তমান প্রশাসন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, জগন্নাথ হল দুর্ঘটনার আরেকটি শিক্ষা হচ্ছে একতাবদ্ধতা। জগন্নাথ হল দুর্ঘটনার পরে ধর্ম, বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সারা দেশের মানুষ সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল। সেসময় মানুষ এক পরিবারে পরিণত হয়েছিল। বর্তমানে দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতেও সবাইকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান উপাচার্য।
দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ বাদ আছর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআ'সহ সব হল মসজিদে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়। ঐ দুর্ঘটনায় ২৬জন ছাত্র, ১৪জন অতিথি ও কর্মচারীসহ মোট ৪০জন নিহত হন এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী ও অতিথি আহত হন।
Advertisement
এমএইচএ/এসআইটি/জেআইএম