আইন-আদালত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চেয়ারম্যানসহ বিচারিক প্যানেল

নিয়োগের পর প্রথম কর্মদিবসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসেছেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

Advertisement

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা ট্রাইব্যুনালে আসেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ও অন্যান্য কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান। তবে বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিচারকদের সংবর্ধনা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

আরও পড়ুন ট্রাইব্যুনাল রেডি, এবার আসো খেলা হবে: মাসুদ বিন সাঈদী বিচার বিভাগ থেকে অবিলম্বে ফ্যাসিস্টদের দোসরদের সরাতে হবে

এর আগে গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। আইন সচিব শেখ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ (১৯৭৩ সালের আইন নং ২১)-এর ধারা ৬-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীকে ওই ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো।

এর আগে হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ৯ অক্টোবর শপথ গ্রহণ করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার।

Advertisement

বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ৯ অক্টোবর হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

এর আগে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সোমবার রাতে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে হাইকোর্টের দুজন বিচারপতি এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজকে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা করার ছিল এই বিচারকাজ শুরু করার ব্যাপারে, এটার একটা বড় ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করবো খুব শিগগির, অচিরেই বিচার কাজ শুরু হয়ে যাবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচারকাজের প্রাথমিক যে প্রি-ট্রায়াল স্টেজ যেখানে ইনভেস্টিগেশন করতে হয়, আলামত সংগ্রহ করতে হয়, সেটার কাজ আমাদের অত্যন্ত দক্ষ প্রসিকিউশন এবং ইনভেস্টিগেশন টিম শুরু করেছে। আমি যতটুকু অবগত হয়েছি ওনারা খুব ক্রেডিবল (নির্ভরযোগ্য) অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এখন বিচারিক কাজ অচিরেই শুরু হবে।’

Advertisement

আরও পড়ুন ৩ বিচারকের সমন্বয়ে আইসিটি পুনর্গঠন, এ মাসেই বিচার কার্যক্রম শুরু ডিমের দাম বাড়লো কেন, তাও আসিফ নজরুলের দোষ

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ছাড়াও ট্রাইব্যুনালে আরও ৫ আইনজীবীকে প্রসিকিউটর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) অ্যাক্ট-১৯৭৩ এর সেকশন ৮ (১) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ অ্যাক্ট এর সেকশন ৩ এর অপরাধসমূহের তদন্ত পরিচালনায় তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়।

তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা হলেন: পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. মাজহারুল হক, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মুহম্মদ শহিদুল্যাহ চৌধুরী, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর, পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহা. মনিরুল ইসলাম, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জানে আলম খান, পুলিশের ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুল ঢাকার সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়দ আব্দুর রউফ, সিআইডি ঢাকা মেট্রোর পুলিশ পরিদর্শক মো. ইউনুস, চারঘাট মডেল থানা রাজশাহীর পুলিশ পরিদর্শক মো. মাসুদ পারভেজ, আরআরএফ ঢাকার পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ আলমগীর সরকার, সিআইডি ঢাকা মেট্রো (উত্তর) পুলিশ পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান।

এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টের অধীনে পরিচালিত বিচার অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে তদন্তকার্য সম্পাদন ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনকে সহায়তা করবেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হত্যা, গণহত্যা ও গুলিতে আহতদের পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল হচ্ছে। এসব অভিযোগে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত আওয়ামী লীগ নেতা ও ক্যাডারদেরকে আসামি করা হচ্ছে।

এফএইচ/এসএইচএস/জেআইএম