জাতীয়

চিরনিদ্রায় শায়িত ছাত্র আন্দোলনে নিহত কাউসার

চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদকে (২২)। সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ এলাকায় জানাজা শেষে মোগলটুলী আবদুর রহমান মাতব্বর জামে মসজিদ কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। এসময় শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ নানা শ্রেণি-পেশার হাজারও মানুষ অংশ নেন।

Advertisement

কাউসার মাহমুদ বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি লক্ষ্মীপুরে জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের আব্দুল মোতালেবের ছেলে। নগরের আগ্রাবাদে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ রোডে তাদের বাসা।

এর আগে কাউসার রোববার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৭০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যুবরণ করেন। পরে সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা হয়। এর পর মরদেহ নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামে।

আরও পড়ুন ফাগুনে ১৬ কোটি হয়ে ফেরার কথা বলে চলে গেলেন কাউসার

জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে খুন হওয়া অনেকের জানাজা আমাকে পড়তে হয়েছে। হাজারও বিএনপি নেতা খুন হয়েছেন। এসব খুনের বিচার এ দেশের মাটিতে অবশ্যই হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

Advertisement

ইসলামী ছাত্রশিবির, চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এস এম শহীদ বলেন, স্বৈরাচারের পতনের দুই মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও আমরা এখনও মরদেহ বয়ে বেড়াচ্ছি। এসব মরদেহের দায়ভার চট্টগ্রাম কুখ্যাত সন্ত্রাসী নুরুল আজিম রনি ও আ জ ম নাছিরের। তারা এখনও ফেসবুকে নানা উসকানিমূলক কথা ছড়াচ্ছে। স্বৈরাচারের যত দোসর আছে সবাইকে আইনের আওতায় আনা উচিত।

জানাজায় আরও অংশ নেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর শাহজাহান চৌধুরী, নগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি।

গত ৪ আগস্ট নিউমার্কেটে ছাত্র-জনতার পূর্ব ঘোষিত আন্দোলনে অংশ নেন শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদ। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশের ছোঁড়া টিয়ারশেলের আঘাতে মাটিতে লুঁটিয়ে পড়েন কাউসার। তখন ছাত্রলীগের বেধড়ক পিটুনিতে কিডনিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তিনি।

পরদিন ৫ আগস্ট নগরের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কাউসারকে। চিকিৎসকরা জানান গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত কাউসারের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। দুই সপ্তাহ ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন কাউসার। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে কাউসারকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। ৭০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শাহাদাত বরণ করেন এ শিক্ষার্থী।

Advertisement

এএজেড/এমআইএইচএস/জিকেএস