শেরপুর জেলা হাসপাতালে ইনজেকশন দেওয়ার পর অন্তত ১৫ জন ভর্তি রোগীর অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। রোববার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার পর হাসপাতালের ৭ নম্বর মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ২টার দিকে পরিস্থিতি খারাপ হলে রোগীদের অক্সিজেন ও ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়।
Advertisement
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, রাতে ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স রোগীদের ওষুধ ও ইনজেকশন দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই বেশ কয়েকজন রোগী শ্বাসকষ্ট, বমি ও জ্বর অনুভব করতে থাকেন। এসময় আতঙ্কিত হয়ে রোগীর স্বজনরা দায়িত্বরত নার্সদের জানালে তেমন কোনো সাড়া পাননি বলে অভিযোগ। পরে স্বজনরা তাদের জরুরি বিভাগে নেন।
খবর পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক এসে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে অসুস্থ কয়েকজনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। তবে ভর্তি কোনো রোগীকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠানো হয়নি বলে দাবি করেছেন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হুমায়ুন আহমেদ নূর।
ভুক্তভোগী রোগী ছাবেরা খাতুন সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাতে ইনজেকশন দেওয়ার পর হঠাৎ শরীরে ব্যথা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তারপর কী হয়েছে বলতে পারি না।’
Advertisement
আরেক রোগী আছিয়া খাতুন বলেন, ‘রাইতে ইনজেকশন দিয়ে চারডে (কিছু) খাইতে বসার পর শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। বমিও হইছে একবার। শ্বাসকষ্ট শুরু হইলে আমারে অক্সিজেন লাগাইছিল।’
রোগীর স্বজন মোসাদ্দিক বলেন, গত তিন দিন ধরে আমার রোগী এখানে ভর্তি ছিল। হুট করে কালকে সেফটিয়াজোন ইনজেকশন দেওয়ার পর বমি শুরু করে। পরে অক্সিজেন দেওয়ার পর রোগী স্বাভাবিক হয়েছে। কয়েকজনের খিঁচুনিও শুরু হইছিল বলে জানান তিনি।
এ ঘটনা জানতে রাতে দায়িত্বে থাকা নার্সকে সোমবার হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নার্সিং ইনস্টিটিউটের সুপারভাইজার রসিদা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘চিকিৎসকরা যে প্রেসক্রিপশন প্রোভাইড করেন, আমাদের নার্সরা সে অনুযায়ী রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। গতরাতের একই ঘটনা ঘটেছে। প্রেসক্রিপশনের উল্লেখিত মেডিসিনই (ইনজেকশন) দেওয়া হয়েছে। একই ব্যাচের মেডিসিন সবাইকেই দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে কয়েকজনের সিমটমের (লক্ষণ) বিষয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
শেরপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের আরএমও ডা. হুমায়ুন আহমেদ নূর জাগো নিউজকে বলেন, মূলত একজনের সমস্যা দেখা দেওয়ায় সবাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে গণ হিস্টোরিয়া তৈরি হয়েছিল। তবে আমরা এখানকার কোনো রোগীকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে রেফার করিনি। কিছু গণমাধ্যমে ১৫ জনের পরিবর্তে অর্ধশতাধিক রোগী ভুল চিকিৎসায় অবস্থার অবনতি বলে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। মূলত এখানে ১৫ জনের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয়েছিল।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, দুই ঘণ্টার মধ্যেই সবার অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে। সবাই এখন তাদের বেডেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/জিকেএস