দেশজুড়ে

সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড, বাঁশের বেড়া

গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের পর থেকে খোঁজ নেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের। আন্দোলনের সময় তার চারতলা বাসভবনটি পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। তার বাসভবন থেকে খুলে নেওয়া হয় লিফট, দরজা-জানালাসহ সকল সামগ্রী।

Advertisement

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর জাহাঙ্গীর আলম কোথায় আছেন তা কেউ বলতে পারছেন না। তবে তার সমর্থকরা কেউ কেউ বলছেন তিনি ভারত হয়ে অন্য দেশে চলে গেছেন। জাহাঙ্গীর আলমের বাসভবনটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। প্রধান ফটকে ঝুলানো রয়েছে তালা। বাসভবনে থাকছেন না কেউ।

এদিকে নগরীর ছয়দানা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে জাহাঙ্গীর আলমের পরিত্যাক্ত ওই বাড়ির সামনে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন জমি বিক্রেতা দাবি করা কয়েকজন ব্যক্তি। তারা জাহাঙ্গীর আলমের বাসভবনটির সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছেন দুইটি সাইনবোর্ড।

জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়ের জাহাঙ্গীর আলম, তার মা সাবেক মেয়র জায়েদা খাতুন ছয়দানা এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করতেন। পরে জাহাঙ্গীর আলম ছয়দানা এলাকায় জমি ক্রয় করে বাড়িটি নির্মাণ করেন।

Advertisement

জমির মালিক দাবিদার সাইফুল ইসলাম বলেন, মেয়রের বাড়ির সামনে তিনটি দোকান ঘর ছিল। তিনি জমিসহ ওই দোকানঘরটির মালিক ছিলেন। তিনি জমিটি বিক্রি করতে চাননি। পরে জাহাঙ্গীর আলমের মামা ও স্থানীয়দের মাধ্যেমে আলোচনা করে সোয়া ১ শতাংশ জমি ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে রাজি হন। প্রায় দশ বছর হয়ে গেলেও তিনি সেই জমির টাকা পাননি।

তিনি আরও বলেন, আমি ওই স্থানে মার্কেট নির্মাণ করে একটিতে নিজে দোকান করতাম এবং অন্য দুইটি দোকান ভাড়া দিয়েছিলাম। ২০১৫ সালে জাহাঙ্গীর আলম পেছনের জমি কিনলেও আমার জমি ছাড়া পেছনে যেতে পারছিলেন না। জাহাঙ্গীরের মামা ও স্থানীয়দের জোরাজুরিতে ৩০ লাখ টাকা মূল্যে ওই জমি বিক্রি করতে রাজি হই। পরে ৫ লাখ টাকা বায়না দিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আর কোনো টাকা দেননি তিনি। তার মায়ের কাছে বেশ কয়েকবার গিয়েছি তারপরও তিনি টাকা দেননি। তার লোকজন দিয়ে দুইবার বেড়া ফেলে দিয়েছে। এবার ভালো করে দিয়েছি পাশে সিসি ক্যামেরাও লাগিয়েছি। সরেজমিনে দেখা গেছে, জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িটি বিধ্বস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। মূল গেইটটিতে তালা লাগানো। সামনে কয়েকটি সিমেন্টের খুঁটি দিয়ে বাঁশ দিয়ে এমনভাবে বেড়া দেয়া হয়েছে ভেতরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামনে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো। সেখানে লেখা আছে, ‘পৈত্রিক সূত্রে এই জমির মালিক সাইফুল ইসলাম, মাসুদা বেগম, মাসুদ মন্ডল, মামুন মন্ডল, কামরুন নাহার ও সামসুন নাহার। এছাড়া সেখানে জমির মৌজা ও পরিমাণও লেখা আছে।’ জাহাঙ্গী আলমের বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড দেখে সাধারণ মানুষের মাঝে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে জাহাঙ্গীর আলমের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত একাধিক ব্যক্তি জানান, জমির মালিক সাইফুলকে তার জমির মূল্যবাবদ টাকা অনেক আগেই জাহাঙ্গীর আলম পরিশোধ করে দিয়েছেন। কিন্তু জমিটি দলিল করে নেওয়া হয়নি। এই সুযোগে সাইফুল জমিটি তার দাবি করছেন।

Advertisement

গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মো. রাশেদ বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমিনুল ইসলাম/এফএ/এএসএম