খেলাধুলা

টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার

২০০৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শুভযাত্রা শুরু হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। নানান চড়াই উতরাই পেরিয়ে মাহমুদউল্লাহর ১৭ বছরের যাত্রা শেষ হচ্ছে আজ ১২ অক্টোবর শনিবার।

Advertisement

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ কালের যাত্রা একই সমান্তরালে চলতে চলতে অবশেষে বিচ্যুত হচ্ছে। নতুন সঙ্গী খোঁজার সময় এসেছে লাল-সবুজের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের।

আজ থেকে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নামবে নতুন মাহমুদউল্লাহর খোঁজে। কবে পাবে, নাকি কখনোই পাবে না- সেটা কারোরই জানা নেই। তবে বিদায় নেওয়া মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশকে যা দিয়েছেন, তা দেশের ক্রিকেটভক্তরা শ্রদ্ধাভরেই স্মরণ করবে চিরকাল।

শনিবার ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। এটাই হবে মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। এরপর টি-টোয়েন্টির জার্সি-বুট-প্যাড তুলে রাখবেন ডানহাতি অলরাউন্ডার।

Advertisement

হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষটা রঙিন হোক মাহমুদউল্লাহর, সেটি লাখো ক্রিকেটভক্তের প্রত্যাশা। কাঙ্ক্ষিত সেই প্রত্যাশা পূরণ হয় কিনা, তা অনিশ্চিত। ভালো কিছু করতে না পারলে আজকের দিনের আগ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহর বীরত্বপূর্ণ কীর্তি লালন করেই বাঁচতে হবে ভক্তদের।

শেষ ম্যাচের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহর অবদান দেখে নেওয়া যাক।

বাংলাদেশের জার্সিতে মোট ১৪০ টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। হায়দরাবাদে আজ মাঠে নেমে এই সংখ্যাকে ১৪১ এ নিয়ে যাবেন তিনি। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১২৯ ইনিংস ব্যাট করেছেন ডানহাতি টাইগার ব্যাটার। রান করেছেন ২৪৩৬। গড় ২৩.৬৫। বল মোকাবেলা করেছেন ২০৭৩টি। স্ট্রাইকরেট ১১৭.৫১।

৭৯টি টি-টোয়েন্টিতে বল হাতে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ১৮৪.৫ ওভার বল করে নিয়েছেন ৪০ উইকেট। ফিল্ডিং করতে নেমে নিয়েছেন মোট ৫১টি ক্যাচ।

Advertisement

বর্ণাঢ্য এই ক্যারিয়ারে অনেকগুলো রেকর্ডও করেছেন মাহমু্দউল্লাহ। চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ডানহাতি টাইগার ব্যাটারের সেই রেকর্ড বইয়ে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ১৪০ ম্যাচে লাল-সবুজ জার্সি গাড়ে জড়িয়েছেন তিনি। ১২৯ ম্যাচ খেলে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সাকিব আল হাসান। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার হলেন মাহমুদউল্লাহ।

সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হলেন মাহমুদউল্লাহ। ১২৯ ইনিংসে ২৪৩৬ রান করেছেন তিনি। এই তালিকায় শীর্ষে থাকা সাকিব করেছেন ১২৭ ইনিংসে ২৫৫১ রান।

৪৩

অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৩টি ম্যাচে তিনি টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ছিলেন। এর মধ্যে ১৬টি ম্যাচে দলকে জিতিয়েছেন। হেরেছেন ২৬টিতে। ৩৯ ম্যাচে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সাকিব।

৮০৪

বাংলাদেশের কোনো একক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি মাহমুদউল্লাহর। দেশের হোম অব ক্রিকেট খ্যাত শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩৬ ইনিংসে ৮০৪ রান করেছেন ডানহাতি টাইগার ব্যাটার। এখানেও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী সাকিব। একই ভেন্যুতে সাকিব করেছেন ৩৪ ইনিংসে ৫৪৭ রান।

একটানা ডাক না মারার তালিকায় বিশ্বের সপ্তম ব্যাটার হলেন মাহমুদউল্লাহ। ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ২০২১ সালের ৩ আগস্ট পর্যন্ত টানা ৬৬ ম্যাচে ০ রানে আউট হননি তিনি। এ তালিকায় শীর্ষে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলার। এক টানা ৯০ ম্যাচে ডাক মারেননি প্রোটিয়া ব্যাটার।

মাহমুদউল্লাহর পরে এ তালিকায় দ্বিতীয় বাংলাদেশি হলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। গেল ৪৫ ম্যাচে একবার ডাক মারেননি তিনি।

৫৪

বাংলাদেশিদের মধ্যে এক টানা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ডে দ্বিতীয় স্থানে আছেন মাহমুদউল্লাহ। ১৩ নভেম্বর ২০১৫ সাল থেকে ৩০ মার্চ ২০২১ সাল পর্যন্ত টানা ৫৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন তিনি। টানা ৬১ ম্যাচ খেলে এ তালিকায় প্রথম স্থানে আছেন আফিফ হোসেন।

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে চার হাঁকানোর তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন মাহমুদউল্লাহ। ১৮৩টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর আগে আছেন সাকিব, লিটন দাস ও তামিম ইকবাল।

এমএইচ/এএসএম