রাস্তার দুর্ভোগ নিরসন না হলে সিটি করপোরেশন ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজধানীর দক্ষিণখান ও উত্তরখানবাসী। তারা বলছেন, বিকল্প সড়ক না রেখে সড়ক খুঁড়ে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় ভোগান্তির সীমা নেই। কোনো রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়ার রাস্তাও অবশিষ্ট নেই। সময়মতো হাসপাতালে নিতে না পারায় রাস্তার মধ্যে সন্তান প্রসবের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া এলাকা দু’টিতে যেসব ক্লিনিক রয়েছে সেখানে চিকিৎসক আসতে পারছে না।’
Advertisement
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাস্তার উন্নয়নকাজ দ্রুত শেষ করা ও দুর্ভোগ নিরসনের দাবিতে দক্ষিণখান বাজারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে দক্ষিণখান ও উত্তরখানের নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ইয়াছিন রানা বলেন, ২০১৬ সালে এই এলাকা ঢাকা উত্তর সিটির আওতায় আসার পর থেকে পরিপূর্ণরূপে উন্নয়নকাজ বন্ধ ছিল। সিটি নির্বাচনের ছয় বছর পরে এসেও এখানের চিত্র বদলায়নি। বৃষ্টি হলেই পুরো এলাকা তলিয়ে যায়, হাঁটার মতো অবস্থা থাকে না। সড়ক খনন নীতিমালা না মেনে সব রাস্তা একসঙ্গে কাটায় স্বাভাবিকভাবে মানুষ যাতায়াত করতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘ গত বুধবার ৯ অক্টোবর দক্ষিণ খান বাজারে ঈদ গাহ মাঠের সামনে একজন গর্ভবতী হেঁটে ক্লিনিকে যাওয়ার সময় রাস্তায় সন্তানপ্রসব করেছেন। অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের মতো রাস্তা নেই। রাস্তার দুর্ভোগ নিরসন না হলে আমরা সিটি করপোরেশন ঘেরাও কর্মসূচি হাতে নেবো।’
Advertisement
মানববন্ধনে দক্ষিণখান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খলিল মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দুর্ভোগ নিয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। না হয় ভোগান্তি নিরসন হচ্ছে না কেন।’ সব রাস্তা একই সময়ে কেটে ফেলা কোন নীতিমালার মধ্যে পড়ে, তা জানতে চান তিনি।
মানববন্ধনে জনগণ পক্ষে সাতটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- ১. কাজের গতি যেকোনো উপায়ে বাড়ানো। ২. জরুরি চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় রাস্তাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে লোকবল বাড়িয়ে চলাচল উপযোগী করা। ৩. যেসব রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে, সেগুলোর একটি টাইম শিডিউল দিয়ে দিতে হবে, কতদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে-এটা জানিয়ে প্রত্যেক রাস্তায় তা লিখে টানিয়ে দিতে হবে। ৪. যে রাস্তার কাজ যে ঠিকাদার পেয়েছেন, সে ঠিকাদারের প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও যোগাযোগের নম্বর জানিয়ে দিতে হবে। ৫. রাস্তার কাজের মান নিয়ে সাধারণ জনগণের মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে-এ বিষয়ে সঠিক তদারকি করতে হবে। ৬. নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ চলতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার কাজ ভালো মানের উপকরণ দিয়ে করার আদেশ জারি করতে হবে। ৭. কোনো ঠিকাদার যথাযথভাবে কাজ না করলে, কিংবা অনুপস্থিত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
মানববন্ধনে স্থানীয় নাহিদ ইসলাম, মুক্তাদির মুন, দারুল উলুম মাদরাসা মসজিদের খতিব গিয়াস উদ্দিন মাদানী, ফয়সাল হোসেন, বারিকুল ইসলাম শোভন, সাজ্জাদ হোসাইন, এহসানুল হক শোভন, মোক্তদির মুন, মামুন হোসেন জমিদার, জয়নাল আবেদিন অনিক, সাইদুল ইসলাম সুমন, মুফতি খায়রুল হোসেন, মুফতি মাসুদুর রহমান, সালাউদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এমএমএ/এমএএইচ/এএসএম
Advertisement