চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। রোববার (১৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের সব নদ-নদী ও সাগরে জারি থাকবে এ নিষেধাজ্ঞা।
Advertisement
নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে বাস্তবায়নে সাগরে উপজেলা মৎস্য বিভাগ, পুলিশ, কোস্টগার্ড কঠোর নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ বার দুর্যোগের কবলে পড়ে এবং মাঝখানে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সাগরে ঠিক মতো জাল ফেলতে না পারায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ আহরণ করতে পারেননি উপজেলার ২৬০০ নিবন্ধিত জেলে। লোকসানে পড়ে অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা গুটিয়ে ফেলছেন।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সাগর থেকে ইলিশ আহরণ করে ডোমখালী ঘাটে ফেরেন শম্ভু জলদাশ। তিনি জানান, এ ট্রিপে তারা ২৩ কেজি ইলিশ পেয়েছেন। কিন্তু মাছের সাইজ (আকার) ছোট। তাদের নৌকায় চারজন জেলে ছিল। মাছের দাম ভালো পেলে হয়তো খরচ উঠতে পারে।
Advertisement
আরেক জেল হারাধন জলদাশ জানান, এ বছর বার বার দুর্যোগে তারা সাগরে ঠিকমতো জাল ফেলতে পারেননি। তাই সারা বছর অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে।
বিকাশ জলদাশ নামের আরেক জেলে জানান, এক সময় চারটি ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরার নৌকা সাগরে যেতো। লোকসান গুণতে গুণতে সব কিছু হারিয়েছেন। এখন একটি নৌকা রয়েছে। এ বছর একদিকে যেমনি দুর্যোগ, অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা আর সাগরে আগেরমতো মাছ না পড়ছে না।
মিরসরাই জেলে সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হরিশংকর জলদাশ বলেন, দুর্যোগ আর নিষেধাজ্ঞায় আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। ছয় মাসের ইলিশ মৌসুমের তিন মাসই থাকে নিষেধাজ্ঞা। বাকি তিন মাস যায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে। যে কারণে সাগরে জাল ফেলতে না ফেলতেই কূলে ফিরতে হয় জেলেদের। এছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠায় মাছ অনেক কমে গেছে।
মিরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, ইলিশের প্রজনন ও মা ইলিশ রক্ষার জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফল করতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। বৃহস্পতিবার ডোমখালী ও সাহেরখালী জলদাশ পাড়ায় অবহিতকরণ সভা করেছি।
Advertisement
তিনি আরো বলেন, মৎস্য বিভাগ, পুলিশ, কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত থাকবে। নিষিদ্ধ এ সময়ে আইন অমান্য করে কেউ ইলিশ আহরণ, মজুদ, পরিবহন বা বিক্রি করলে বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এম মাঈন উদ্দিন/আরএইচ/এএসএম