বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগকে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য আন্দোলন করেনি। শুধু ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করেছে। তাহলে যে দল গত ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে মানুষকে উন্নয়নের মহাসড়কের গল্প শুনিয়েছে, সে দল কেন ক্ষমতা ছেড়ে এক মিনিটও থাকতে পারলো না?
Advertisement
তিনি বলেন, দুর্নীতি করে দেশের-জনগণের সম্পদ লুটপাট এবং জনগণের ওপর দীর্ঘ ১৫ বছর অমানবিক জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা চালানো হয়। এসব কারণেই আওয়ামী লীগ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ভীত হয়ে গোষ্ঠীসহ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি উত্তর থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, (আওয়ামী লীগের নেতাদের পালিয়ে যাওয়ার) একমাত্র কারণ তারা দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নেয়নি। বরং দুর্নীতি-লুটপাট করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় তৈরি করেছে। এটি তারা নিজেরাও জানে। সেজন্যই ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে।
Advertisement
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ওপর আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে যত জুলুম, নির্যাতন করেছে তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মীকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়নি এবং যায়নি। কারণ, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা মানুষের সম্পদ লুটপাট করেননি এবং মানুষ হত্যা করেননি। জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মসূচিই হচ্ছে মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন পূজামণ্ডপে গান গাওয়ার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সম্পৃক্ততা নেই আওয়ামী লীগ নির্বাচন চায় না, তাদের ওপর নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া জুলুমজামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণে আদর্শ মানুষ প্রয়োজন। তাই জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আদর্শ মানুষ তৈরির কাজ করছে। জামায়াতে ইসলামীর ছায়াতলে অসংখ্য আদর্শ মানুষ রয়েছে। এর আগেও জামায়াতের নেতাকর্মীরা এমপি, মন্ত্রী, চেয়ারম্যান হয়ে দেশের বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে নিজেদের নৈতিকতার প্রমাণ দিয়েছেন ও আদর্শ মানুষ হিসেবে জনগণের সামনে পেশ করতে সক্ষম হয়েছেন। আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সে ধারা অব্যাহত থাকবে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতা চায় না, চায় দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক। ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলেই বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে সোনার বাংলা হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশের নেতৃত্ব যারা দেবে সেসব ব্যক্তি পরিবর্তন না হলে দেশের নাগরিকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে না।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী ব্যাংকিং খাত, শিক্ষা খাত, স্বাস্থ্য খাতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। আর শেখ হাসিনা জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের তৈরি করা ব্যাংক, বিমা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলে নিয়ে লুটপাট করে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
Advertisement
কর্মী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও ধানমন্ডি উত্তর থানা আমির আবু শাহাদাত মোহাম্মদ আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন- দলের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল-আমিন। উপস্থিত ছিলেন মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, জাহেদুর রহমান, মাওলানা মুহিব্বুল হক ফরিদ, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দীন তালুকদার প্রমুখ।
এএএম/কেএসআর/এএসএম