ভরা মৌসুমে বান্দরবানে ২৩ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় কমপক্ষে ২৩ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
Advertisement
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রকৃতির সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি পাহাড় কন্যা খ্যাত এই বান্দরবানে সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত ভিড় জমান দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক। তবে সরকারি বিশেষ ছুটির দিনে এদের সংখ্যা বাড়ে কয়েক গুন।
এসব পর্যটকদের সেবায় বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন জেলার অন্তত ১০ হাজারেরও অধিক মানুষ। তারা বছর জুড়ে ব্যবসা করলেও অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর- এই তিন মাসের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করেন ভালো ব্যবসার আশায়।
কিন্তু এই ভরা মৌসুমে টানা ২৩ দিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলা জুড়ে পর্যটনের বিভিন্ন খাতে অন্তত এক কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই হিসেবে এই ২৩ দিনে কমপক্ষে ২৩ কোটি টাকা ক্ষতি হবে বলছেন ব্যবসায়ীরা।
Advertisement
এর আগে ২০২০ সাল থেকে করোনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ও সবশেষ নিরাপত্তাজনিত কারণে টানা ২৩ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের ফটোগ্রাফার সিদ্দিক উল্লাহ জানান, কঠিন চীবর দানোৎসব, দুর্গাপুজাসহ টানা চারদিনের সরকারি ছুটিতে পর্যটকের উপস্থিতি থাকার কথা ছিল। কিন্তু ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটকের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। হিলভিউ হোটেলের ম্যানেজার মো. তৌহিদ পারভেজ জানান, টানা চারদিনের সরকারি ছুটি উপলক্ষে হোটেলের ৬০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং নিয়ে ছিলেন ভ্রমণ প্রত্যাশীরা। নিষেধাজ্ঞার কারণে সব বুকিংয়ের টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ২৩ দিনে অন্তত ৫০ লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হবে।
পর্যটকবাহী চাঁদের গাড়িচালক মো. শরিফ জানান, দীর্ঘ চার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন কারণে পর্যটকের সংখ্যা কমেছে বান্দরবানে। টানা চারদিনের ছুটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পর্যটকের উপস্থিতি থাকার কথা থাকলেও এবার নেই বললেই চলে। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকায় মুশকিল হয়ে পড়েছে।
বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জসীম উদ্দীন মোবাইলে জাগো নিউজকে জানান, বান্দরবানের পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মূলত এই মৌসুমের অপেক্ষায় থাকে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলতি মাসের ৮-৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের বান্দরবান ভ্রমণ না করার অনুরোধ করা হয়েছে। এ সময়ে ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা করার কথা থাকলেও ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করার ফলে ২৩ দিনে জেলাজুড়ে অন্তত ২৩ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
Advertisement
নয়ন চক্রবর্তী/জেডএইচ/জিকেএস