ক্যাম্পাস

এই সরকার বিফল হলে ভারতীয় কর্তৃত্ববাদ আবার প্রতিষ্ঠিত হবে

বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার বিফল হলে বাংলাদেশে আবারো ভারতীয় কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এজন্য তিনি সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির করিডোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই মতবিনিময় সভা আয়োজন করে।

সভায় মাহমুদুর রহমান বলেন, দুটো লক্ষ্যে ছাত্র জনতার আন্দোলন হয়েছিল। প্রথম লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন ঘটানো। দ্বিতীয়ত ভারতীয় আধিপত্যবাদকে নির্মূল করা। আমাদের প্রথম লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়টা আমরা এখনও অর্জন করতে পারিনি। এখন সুযোগ এসেছে, ভারতীয় আধিপত্যবাদকে চিরতরে উৎখাত করার। এজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সকল চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ এই সরকার না টিকলে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ আবার মাথাছাড়া দিয়ে উঠবে। সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সীসাঢালা ঐক্য লাগবে। ১৮ কোটি জনগণ যদি এক থাকে তাহলেই ভারতীয় আধিপত্যবাদের উৎখাত সম্ভব।

তিনি বলেন, সরকারের দিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে। যাতে তারা বিপথগামী না হয়। সবাইকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে আবরার শহীদ হয়েছে। আমাদের এ লড়াইকে অব্যাহত রাখতে হবে৷ অর্জিত বিপ্লবকে কোনোভাবেই বিপথগামী করা যাবে না।

Advertisement

এছাড়া সরকারের সমালোচনা করে সম্পাদক বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত তাদের শক্তি দেখাতে পারেনি। সরকার খুব স্লো। তারা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অর্থবহ অ্যাকশন নিতে পারেনি। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কোন আইনে সে ভারতে বসে আছে। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আছে। আমি মামলা করার জন্য কুষ্টিয়ায় এসেছি। আমার মামলার ১নং আসামি হাসিনা। মামলার ভিত্তিতে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমি দাবি জানাবো।

শেখ হাসিনাকে দিল্লীর ঘৃণ্য এজেন্ট হিসেবে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট ও ইসলামবিরোধী সরকার ছিল সেটি সরাসরি দিল্লি থেকে পরিচালিত হয়েছে। ১৯৮১ সালে ইসলাম এবং বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য সে দিল্লী থেকে এসেছিল। পতনের পর এখন আবার প্রভুর কাছেই আশ্রয় নিয়েছে। দিল্লী ছাড়া তার আর যাওয়ার জায়গা নেই।

ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার জন্য আমি সাত দিনের সময় দিয়েছিলাম। রোববার সেই সময় শেষ হবে৷ রোববারের মধ্যে যদি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে সোমবার থেকে আমার দাবির সমর্থনে আপনারা এখানে আন্দোলন শুরু করবেন। নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমি ঢাকায় মাঠে থাকবো। আপনারা এখানে মাঠে থাকবেন। বাংলাদেশের একমাত্র জঙ্গী সংগঠন হলো এই ছাত্রলীগ। আওয়ামী লীগ থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসীদের থেকে মুক্তি পেতে হবে। আগে ছাত্রলীগকে দিয়ে শুরু করি পরে আওয়ামী লীগকে ধরবো।

এ সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও আমার দেশ পত্রিকার নগর সম্পাদক এম. আব্দুল্লাহ, এবি পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মেজর আব্দুল ওয়াহাব মিনার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইটসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

মুনজুরুল ইসলাম/এফএ/এএসএম