পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে মোটে ৪৫ রান। মনে হচ্ছিল, এবার সিরিজে ফেরার ভালো সুযোগ আছে বাংলাদেশের। ভারতকে মোটামুটি একটা সংগ্রহে আটকে রাখতে পারলেই হতো।
Advertisement
কিন্তু পাওয়ার প্লের পরেই লাগামছাড়া বোলিং শুরু করেন টাইগার বোলাররা। রিশাদ হোসেন এক ওভারে দেন ২৪, মেহেদী হাসান মিরাজ ২৬। সেই ধারা চলতে থাকে শেষ পর্যন্ত।
চতুর্থ উইকেটে নিতিশ কুমার আর রিঙ্কু সিংয়ে ৪৯ বলে ১০৮ রানের বিধ্বংসী জুটিতে ভর করে বিশাল সংগ্রহই গড়ে ফেলেছে ভারত। ৯ উইকেটে তারা তুলেছে ২২১ রান। অর্থাৎ সিরিজ বাঁচাতে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ২২২।
দিল্লিতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টসভাগ্য ছিল বাংলাদেশের। ভারতকে প্রথমে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানান টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
Advertisement
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথম ওভারেই ১৫ রান তুলে নেয় ভারত। তবে পরের ওভারেই উইকেট এনে দেন তাসকিন আহমেদ। টাইগার পেসারের বলে মিডঅফে শান্তর হাতে তুলে দেন সঞ্জু স্যামসন (৭ বলে ১০)।
পরের ওভারে তানজিম হাসান সাকিব টানা দুই বাউন্ডারি হজম করে আউট করেন অভিষেক শর্মাকে। ১৪৭ প্লাস গতির বলে ইনসাইডেজ হয়ে স্টাম্প ভাঙে অভিষেক শর্মার। ১১ বলে তিনি করেন ১৫। দলীয় ২৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ভারত।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে তানজিম সাকিব আরও একটি উইকেট পেতে পারতেন। কিন্তু নিতিশ কুমারের ব্যাটে ছুঁয়ে যাওয়া বল লাফ দিয়ে গ্লাভসে নিয়েও রাখতে পারেননি লিটন দাস।
তবে পরের ওভারে অর্থাৎ পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান তুলে নিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে। ১০ বলে ৮ করে সূর্য কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দেন মিডঅফে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারত তোলে ৪৫ রান।
Advertisement
এরপরই বাঁক বদল। নবম ওভারে মাহমুদউল্লাহর বলে জোড়ালো আবেদন হয়েছিল। বল লেগেছিল রিভার্স সুইপ খেলতে চাওয়া নিতিশের প্যাডে। কিন্তু আম্পায়ার আবেদন নাকচ করে দেন। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। আম্পায়ার্স কলে আউট থেকে বেঁচে যান নিতিশ।
জীবন পেয়ে নিতিশ পরের ওভারে রিশাদকে হাঁকান টানা দুই ছক্কা। শেষ বলে আবার একটি মারেন রিঙ্কু সিং। ওই এক ওভারেই রিশাদ খরচ করেন ২৪ রান। ১০ ওভারে ১০০ পার হয় ভারতের।
৪৫ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন নিতিশ আর রিঙ্কু। ২৭ বলেই ফিফটি করেন নিতিশ। অবশেষে ইনিংসের ১৪তম ওভারে মোস্তাফিজের কাটারে বল আকাশে তুলে দেন তিনি। ৩৪ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে নিতিশ হাঁকান ৭টি ছক্কা।
ছক্কা মেরে ফিফটি পূরণ করেন রিঙ্কু। ২৬ বলে হাফসেঞ্চুরি আসে তার ব্যাট থেকে। ১৭তম ওভারে তাসকিনকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে জাকের আলির হাতে ধরা পড়েন রিঙ্কু। ২৯ বলে ৫ চার আর ৩ ছক্কায় তিনি করেন ৫৩।
শেষদিকে হার্দিক পান্ডিয়া ১৯ বলে ৩২ আর রিয়ান পরাগ ৬ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিশাল সংগ্রহে পৌঁছে দেন।
প্রথম তিন ওভারে ৪৭ রান খরচ করা রিশাদ ইনিংসের এবং নিজের শেষ ওভারে এসে তুলে নেন তিনটি উইকেট। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে ৫৫ রান খরচ করেন এই লেগস্পিনার।
তানজিম হাসান সাকিব ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। সতীর্থদের এই রান খরচের দিনেও দারুণ বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ। ৪ ওভারে ১৬ রানে তার শিকার ২ উইকেট।
মোস্তাফিজুর রহমান সমান ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজ ৩ ওভারে ৪৬ রান খরচ করেও ছিলেন উইকেটশূন্য।
এমএমআর/জিকেএস