দেশজুড়ে

সেটেলমেন্ট অফিসের সাবেক কপিস্টের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্ধকোটি!

যশোর সেটেলমেন্ট অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কপিস্ট আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৪৬ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪৬ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Advertisement

বুধবার (৯ অক্টোবর) দুদক যশোরের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বাদী হয়ে যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।

অভিযুক্ত আতাউর রহমান বর্তমানে শহরের নীলগঞ্জ তাঁতীপাড়ার বাসিন্দা। তিনি মণিরামপুর উপজেলার বাংগালিপাড়ার আছির উদ্দিন মোড়লের ছেলে।

আতাউর রহমানের স্ত্রী দিলরুবা পারভীন যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে চাকরিরত।

Advertisement

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের আওতায় যশোর জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে যোগদান করেন আতাউর রহমান। ২০২০ সালের এপ্রিলে তিনি পিআরএলে (অবসরোত্তর ছুটি) যান। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়ায় দুদক তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নির্ধারিত ফরমে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তালিকা দাখিল করেন আতাউর রহমান। ওই বিবরণীতে যশোরে একটি চারতলা বাড়ি ও মণিরামপুরে ছয়টি দলিলে ১০০.১ শতক জমিসহ এক কোটি ৮ লাখ ১৩ হাজার টাকার স্থাবর এবং উপহারের পাঁচ ভরি সোনা, ল্যাপটপ কম্পিউটার ৫৬ হাজার টাকাসহ মোট এক কোটি ৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকার সম্পদের হিসেব দেখান। তবে দুদকের অনুসন্ধানে তার সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় এক কোটি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫০৮ টাকা মূল্যের।

আতাউর রহমান ২০২২-২৩ আয়বর্ষে আয়কর রিটার্ন ফরমে মোট আয় এক কোটি ৩২ লাখ ১৯ হাজার ৬১৪ টাকা দেখিয়েছেন। ওইসময় স্ত্রীকে জমি কেনা বাবদ ১০ লাখ টাকা দান ও টয়োটা গাড়ি কেনা বাবদ সাড়ে ১২ লাখ টাকা ব্যয়সহ ৫৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা পারিবারিক ব্যয় দেখান। বাবার কাছ থেকে ছয় লাখ ও সোনার অলংকার বিক্রি বাবদ পাঁচ লাখ ১৪ হাজার টাকা প্রাপ্তি দেখালেও তার সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। স্ত্রীর কাছ থেকে ৯ লাখ এবং জমি বিক্রি বাবদ ১৬ লাখ টাকা আয়ের দাবি করলেও তারও প্রমাণ দেখাতে পারেননি আতাউর রহমান।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার নিট সম্পত্তি এক কোটি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫০৮ টাকা। কিন্তু খরচ বাদে তার সম্পদের পরিমাণ হওয়ার কথা ৬৪ লাখ ৮০ হাজার ৭৬২ টাকা। বাস্তবতা ও হিসেবে প্রদর্শিত সম্পদের পার্থক্য ৪৬ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪৬ টাকা, যা তিনি অবৈধ পন্থায় আয় করে নিজের কাছে রেখেছেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদক যশোরের উপপরিচালক মো. আল আমিন।

Advertisement

মিলন রহমান/এসআর/জিকেএস