দেশজুড়ে

ছাত্রদল নেতাকে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যা, সাড়ে ৯ বছর পর মামলা

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সাড়ে ৯ বছর আগে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কবির হোসেন রনিকে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই এবং বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, সাবেক ডিআইজি, পুলিশ সুপার ও পুলিশের আরও ৫ কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে নিহত ছাত্রদল নেতার ছেলে আশিকুর রহমান আসিফ (২০) বাদী হয়ে বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে এ মামলা করেন। আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মোখলেচুর রহমান মামলাটির এজাহার রুজু করার জন্য আগৈলঝাড়া থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম পান্না ও বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ আক্তারুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন, বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, আগৈলঝাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান ও আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লিটন সেরনিয়াবাত, বরিশাল রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি মো. হুমায়ন কবির, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আকরাম হোসেন, বরিশাল জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. এহসানউল্যাহ, সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক, আগৈলঝাড়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছাত্তার মোল্লা, সৈয়দ আশরাফ মিয়া, মামুন কবিরাজ, অনিমেষ মন্ডল ও স্বপন মন্ডল। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

Advertisement

মামলার বরাতে আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম পান্না জানান, মামলার আসামি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, মোর্তুজা খান, রইচ সেরনিয়াবাত ও আবুল সালেহ্ লিটন মোল্লাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা গত ১৫ বছর ধরে সমগ্র জেলাকে একটি নৈরাজ্যের জনপদ এবং ভয়াল উপত্যকায় পরিণত করেন।

বাদীর বাবা কবির হোসেন রনি বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। আসামি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে বাদীর বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্ররোচনায় পুলিশ কর্মকর্তারা ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল নেতা রনিকে ঢাকার নবীনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। পরে তাকে অমানবিক নির্যাতন করেন। ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটায় আগৈলঝাড়া উপজেলার বাইপাস ব্রিজের পশ্চিম পাশে রাস্তায় ছাত্রদল নেতা রনিকে গুলি করে হত্যা করেন। পরে সকল আসামিরা বিষয়টি একযোগে ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টার নামে প্রচার করেন।

তবে আসামিদের ভয়ে মামলা করতে সাহস পায়নি ছাত্রদল নেতার পরিবার। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আদালতে মামলা করেন বাদী।

মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন, প্রধান আসামি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ১৯৭৪ সালে বিএম কলেজের ছাত্র নজরুল, সদরুল ও সমরেশকে রাতের আধারে তার গুন্ডাবাহিনী দিয়ে খুন করেছেন।

Advertisement

শাওন খান/এফএ/এমএস