অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুরে মোট ৩৫৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৭৪টি ও মাধ্যমিক ৮৩টি। বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
Advertisement
এদিকে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হওয়ায় কংস ও নেতাই নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. আবু ইউসুফ বলেন, হালুয়াঘাটে ১৬৫, ধোবাউড়ায় ৯০ ও ১৯ বিদ্যালয়সহ তিন উপজেলায় ২৭৪ প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহসিনা খাতুন বলেন, হালুয়াঘাট মোট প্রতিষ্ঠান ৫৭টি, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫৪টি, আশ্রয়কেন্দ্র ১৭টি ও পাঠদান চালু আছে তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ধোবাউড়া মোট প্রতিষ্ঠান ৩৪টি। এরমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২০টি, আশ্রয়কেন্দ্র ১০টি ও পাঠদান চালু আছে ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ফুলপুরে ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বন্ধ ৯টি ও পাঠদান চালু আছে ৫১টিতে। মোট ৮৩টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ আছে।
Advertisement
এদিকে কংস নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা ধোবাউড়া উপজেলার আইলাতলী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘরে মঙ্গলবার সকালে পানি ওঠায় দুর্ভোগ বেড়েছে বাসিন্দাদের।
এখানকার বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ঘরের চারপাশে পানি। পোলাপান নিয়ে পানির মধ্যে কষ্টে আছি। গতকাল শুধু একটি সংগঠন আমাদের বিরিয়ানি দিয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মিনতি রানী পাল বলেন, বন্যায় পূজার আনন্দ ম্লান হয়েছে। দুবেলা খাবারই কপালে জুটছে না। পূজা করবো কীভাবে? সরকার সহযোগিতা করলে অন্তত সন্তান নিয়ে চলতে পারতাম।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কংস ও নেতাই নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। অন্তত ২৫টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
Advertisement
তিন উপজেলায় নগদ সাত লাখ টাকা ও ৬৩ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত শারমিন বলেন, সকালের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় পানি কিছুটা বেড়েছে, সেই সঙ্গে নতুন কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমরা বানভাসি মানুষকে শুকনো খাবারের পাশাপাশি ওষুধ সরবরাহ করছি। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, নতুন করে উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নসহ চারটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৬টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে।
হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহমেদ বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে হালুয়াঘাটে বন্যার সৃষ্টি হয়। উজানের পানি কমে এখন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ১৮ হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাময়িকভাবে তাদের সহযোগিতা করার পাশাপাশি ক্ষতি নিরূপণ করে সহযোগিতা করতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হবে।
মঞ্জুরুল ইসলাম/জেডএইচ/এএসএম