ধর্ম

মসজিদে অমুসলিমদের অনুদান গ্রহণ করা যাবে কি?

মুসলমানদের সমাজের একটি অপরিহার্য ইমারত ও প্রতিষ্ঠান হলো মসজিদ। এটি মুসলমানদের সম্মিলিতভাবে নামাজ আদায়ের স্থান, দীন শেখার স্থান এবং মুসলমানদের সব ধরনের সামাজিক কার্যক্রমের কেন্দ্র।

Advertisement

মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ, প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার যাবতীয় খরচের ব্যবস্থা করা মুসলমানদেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ইমান রাখে, নামাজ কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, তারা হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সুরা বাকারা: ১৮)

এ আয়াতের আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম আবু বকর জাসসাস (রহ.) বলেন, এ আয়াতের দাবি হল, মসজিদে প্রবেশ, মসজিদ নির্মাণ, এর রক্ষণাবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয়ে অমুসলিমের শরিক না করা। (আহকামুল কোরআন: ৩/৮৭)

তাই মসজিদের ব্যয় মুসলমানদের স্বতঃস্ফূর্ত অনুদানের মাধ্যমেই হতে হবে। মসজিদের কোনো কাজে অমুসলিম কোনো ব্যক্তি বা অমুসলিমদের কোনো সংগঠনের অনুদান গ্রহণ করা যাবে না।

Advertisement

মসজিদ নির্মাণের ফজিলত

মসজিদ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের অপরিসীম ফজিলত রয়েছে। তাই প্রত্যেক মুসলমানেরই কর্তব্য মসজিদ নির্মাণ ও এর ব্যবস্থাপনার খরচে অংশগ্রহণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করা।

নবিজি (সা.) বলেছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন। (সহিহ বুখারি: ৪৫০)

কোরআনে আল্লাহ তাআলা মসজিদ নির্মাণকে তার মুমিন-মুত্তাকিদের কাজ হিসেবে বর্ণনা করেছেন যেমন আমরা ওপরে উল্লেখ করেছি। কোরআনে আল্লাহ তাআলা তার নবি ও খলিল ইবরাহিমের (আ.) কাবা ও মসজিদুল হারাম নির্মাণের ঘটনা বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। যে কাজের তত্ত্বাবধান করেছেন, দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা স্বয়ং। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর স্মরণ কর, যখন আমি কাবাকে মানুষের জন্য মিলনকেন্দ্র ও নিরাপদ স্থান বানালাম এবং বললাম ‘তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থানরূপে গ্রহণ কর’। আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতেকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর। (সুরা বাকারা: ১২৫)

সুরা হজে নবি ইবরাহিমকে (আ.) মসজিদ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের নির্দেশ দেওয়ার কথা বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন, আর স্মরণ কর, যখন আমি ইবরাহিমকে সে ঘরের (বায়তুল্লাহ) স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, আমার সাথে কাউকে শরিক করবে না এবং আমার ঘরকে পাক সাফ রাখবে তাওয়াফকারী, রুকু-সিজদা ও দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়কারীদের জন্য। (সুরা হজ: ২৬)

Advertisement

ওএফএফ/এএসএম