জাতীয়

মশককর্মী পরিচয়ে পাসপোর্ট নিয়ে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন এএসপি কাফী

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী পরিচয় গোপন করে সিটি করপোরেশনের মশার ওষুধ ছিটানোর কর্মী পরিচয়ে পাসপোর্ট নিয়েছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠলে তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে এই পাসপোর্ট করেন।

Advertisement

ওই পাসপোর্ট নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ টি এম আবু আসাদ এসব তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ধরা পড়ার পর ভুয়া তথ্য দিয়ে নেওয়া সেই পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। এ ঘটনায় গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ায় পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’

Advertisement

আবু আসাদ বলেন, ‘আবদুল্লাহিল কাফী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নেওয়া তার সরকারি পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে পরিচয় গোপন করে সিটি করপোরেশনের কর্মী হিসেবে সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। এ জন্য তিনি সিটি করপোরেশনের জাল অনাপত্তি জমা দেন।’

আরও পড়ুনহত্যার পরে লাশ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফী আটক ৯ সদস্যের সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন 

তিনি বলেন, ‘আগারগাঁওয়ের পাসপোর্ট দপ্তরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাধারণের বেশে এসে সবার জন্য নির্ধারিত কাউন্টারে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। তিনি পাসপোর্টের জন্য জমা দেওয়া আবেদনপত্রের সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্প্রে ম্যান সুপারভাইজার পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কাগজ জমা দিয়েছিলেন।’

সংবাদ সম্মেলনে আবু আসাদ আরও বলেন, ‘গত ১৫ আগস্ট আবেদন করেন তিনি। সেদিনই তিনি সাধারণ পাসপোর্ট পেয়ে যান। জরুরি ফি জমা দেওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তিনি ওইদিনই পাসপোর্ট পান। তথ্য গোপন ও জাল কাগজপত্রের বিষয়টি ৪ সেপ্টেম্বর জানার পর পুলিশ কর্মকর্তা কাফীর নতুন পাসপোর্ট বাতিল করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।’

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ‘৯ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ বিষয়ে জবাব দেন। ওইদিন অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম তার গাফিলতির কথা স্বীকার করেন। পরে সবকিছু যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হওয়ার পর রোববার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তদন্তে আরও কারও গাফিলতির প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Advertisement

সাধারণ পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করলে গত ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে আবদুল্লাহিল কাফীকে আটক করা হয়। এরপর তাকে হাজারীবাগে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগে করা এক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তবে মামলাটি হয় আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর। ৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে আবদুল্লাহিল কাফীকে বরখাস্ত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন) সেলিনা বানু, সিস্টেম অ্যানালিস্ট নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া প্রমুখ।

টিটি/কেএসআর