সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফোরকানউল্লাহ বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টি সহায়তার মাধ্যমে তারল্য সহায়তা পেয়ে গতি পেয়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এর ফলে গ্রাহকদের পুরো টাকা না দিতে পারলেও ছোট ছোট পরিমাণ তাৎক্ষণাত পরিশোধ করা হচ্ছে।
Advertisement
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৯৪ কোটি টাকা বকেয়া এবং খেলাপি ঋণ আদায় করা হয়েছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এসআইবিএলের ওপর গ্রাহকের পূর্ণ আস্থা ফিরে আসবে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় ব্যাংকটি।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সাদিক ইসলাম জানান, ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকটি দেশের প্রথম সারির ব্যাংকে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু যখন সাফল্যের চূড়ার অভিমুখে এগিয়ে চলছিল দ্রুতগতিতে, ঠিক তখনই দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়নের কবলে পড়ে প্রিয় এই ব্যাংক। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ জোরপূর্বক দখল করে নেয়। তাদের কবলে পড়ে ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত ৮ বছরে ব্যাংকটির মজবুত অর্থনৈতিক ভিত্তি যেমন দুর্বল হয়েছে তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাংকের গ্রাহক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ যখন স্বৈরাচারী শাসনমুক্ত হয়ে পুনরায় স্বাধীনতার স্বাদ পেলো তখন দুর্বৃত্তের কালো থাবামুক্ত হলো সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং খাত পড়ে যায় সাময়িক সংকটে। যেহেতু এই পতিত সরকারের সরাসরি দোসররা দখল করে রেখেছিল তাই এই ব্যাংকেরও ক্ষতি হয়েছে। এতে এসআইবিএল কিছুটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তার মধ্যে তারল্য সংকট অন্যতম।
এসময় গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে গ্রাহকদের আমানত সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। আপনাদের ধৈর্য্য ও ভালোবাসার প্রতিদান দেবো আপনাদের আমানতের নিরাপত্তা ও সর্বোত্তম সেবা দেওয়ার মাধ্যমে।
আমরা আশা করি, নতুনভাবে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবো আপনাদের সঙ্গে নিয়ে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক উৎকর্ষের পথে এগিয়ে যাবে, দরদী সমাজ গঠনে ভূমিকা রেখে নিজস্ব লক্ষ্য অর্জন করবে ইনশা আল্লাহ।
ব্যাংকটির এমডি জানান, দেশের ৯টি ব্যাংক তারল্য সমস্যায় ভুগছে। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা না ছাপিয়ে ভিন্ন পদ্ধতিতে গ্যারান্টির মাধ্যমে তারল্য সংকটের সমাধান করেছে, যা প্রশংসার দাবি রাখে। এরই মধ্যে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে ৪টি ব্যাংক থেকে ৯০০ কোটি টাকার তারল্যের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি এবং তন্মধ্যে ৪৫০ কোটি টাকা তারল্য পেয়েছি। আরও কয়েকটি ব্যাংক ইতোমধ্যে আমাদের তারল্য/ডিপোজিট প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
Advertisement
তিনি বলেন, তারল্য প্রবাহ বাড়ানোর উত্তম উপায় রিকভারির ক্ষেত্রে আমাদের বৃহৎ কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে ৫ আগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমরা ৭৯৪ কোটি টাকা ওভারডিউ ও ক্লাসিফাইড বিনিয়োগ থেকে রিকভারি করেছি। দুঃসময়ে এই রিকভারির পরিমাণ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আমাদের পরিকল্পনা হলো ক্লাসিফাইড ও অবলোপনকৃত বিনিয়োগ থেকে আদায়ের কার্যক্রমকে আরও জোরদার করা।
ইএআর/এমআইএইচএস/এমএস