রোববার গোয়ালিয়রে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি। তবে গোয়ালিয়রে এই ম্যাচ শুরুর আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে হিন্দু মহাসভা। শুধু তাই নয়, কানপুর টেস্টের আগেও হুমকি দেয়া হয়েছিলো। যদিও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কারণে কোনো নাশকতা করতে পারেনি দুবৃত্তরা।
Advertisement
মধ্যপ্রদেশের অন্যতম শহর গোয়ালিয়রে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ঘিরেও হুমকি দিয়ে রেখেছে হিন্দু মহাসভা। যে কারণে বাংলদেশ দলের ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
তবে এরই মধ্যে একটি সংবাদে কিছু আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। শুক্রবার গোয়ালিয়রে টিম হোটেলের কাছাকাছি অবস্থিত মোতি মসজিদে জুমার সালাত আদায় করতে গেলেন না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। হোটেলের ঘরেই প্রার্থনা সারলেন তারা।
বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা যে হোটেলে রয়েছেন, সেখান থেকে ফুলবাগ অঞ্চলের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা জুমার নামাজ পড়তে সেখানে যাবেন বলে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কিন্তু জানা যাচ্ছে, শেষ পর্যন্ত তারা আসেননি মসজিদে যাননি। হোটেলেই জুমার নামাজ পড়েছেন তারা।
Advertisement
গোয়ালিয়র পুলিশের তরফ থেকে অরবিন্দ সাক্সেনা সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানান, ‘আমরা সব রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থাই করে রেখেছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা আসেননি। কোনও বিশেষ সংগঠন থেকে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে, এরকম কোনও খবরও নেই।’
অরবিন্দ সাক্সেনার যুক্তি মাত্র ৩ কিলোমিটার পথের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এমন কিছু কঠিন কাজ নয়। তারা প্রস্তুত ছিলেন। তার বক্তব্য, ‘সম্ভবত বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্ট থেকেই মসজিদে না যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জাগোনিউজের পক্ষে থেকে যোগাযোগ করা হয় গোয়ালিয়রে অবস্থান করা বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার রাবিদ ইমামের সঙ্গে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘টিম হোটেল থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরে মাঠ। আর মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে মসজিদ। পিটিআইয়ের দাবি অনুযায়ী, ২৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ক্রিকেটাররা অনুশীলন করলেও কেন তিন কিলোমিটার দূরে মসজিদে গিয়ে জুমার সালাত আদায় করলেন না?’
রাবিদ ইমাম জাগোনিউজকে বলেন, ‘মূলত নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন বা শঙ্কিত- বিষয়টা এমন না। পাকিস্তানেও কখনো কখনো আমরা মসজিদে যাইনি। মূলত আমাদের প্র্যাকটিস সিডিউল ছিল। মসজিদে যাওয়া নিয়েও চিন্তা ছিল যে, কে কিভাবে যাবে সেখানে যাবে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে কি না কিংবা মসজিদে জায়গা সঙ্কুলান হবে কি না। সব মিলিয়ে আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল, সময়মত প্র্যাকটিসে উপস্থিত হওয়া। সে কারণে আমরা হোটেলে একজন হুজুর আনিয়ে সেখানে জুমার সালাতের আয়োজন করেছি।’
Advertisement
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। যদিও ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকেও এই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের এই অভিযোগ তুলে এরই মধ্যে বুধবার বাংলাদেশ দল গোয়ালিয়রে পৌঁছনোর পরেই বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয় হিন্দু মহাসভার পতাকায়।
কালো পতাকা দেখিয়ে, ‘গো ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। তবে বাংলাদেশ দলের জন্য আঁটসাট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে গোয়ালিয়রে। নিরাপত্তা শঙ্কা সত্বেও সিরিজের প্রথম ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
এআরবি/আইএইচএস/