দেশজুড়ে

ধান দিয়ে গড়া প্রতিমার সোনালি আভায় বিস্মিত সবাই

নাটোরে একটি একটি করে ধান দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে দুর্গা প্রতিমা। দেখলে মনে হবে এটি সোনা দিয়ে মোড়ানো। প্রতিমা দেখে বিস্মিত দর্শক ও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

Advertisement

দুর্গাপূজা উপলক্ষে নাটোর শহরের লাল বাজারে রবি সুষম সংঘের উদ্যোগে এই প্রতিমা বানিয়েছেন শিল্পী বিশ্বজিৎ পাল।

তিনি বলেন, প্রতিমার কাজ শেষ করতে চারজন শিল্পীর এক মাসের বেশি সময় লেগেছে। এই প্রতিমার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে ফ্রেম তৈরি। এরপর মাটির কাজ শেষ করে প্রতিমার শরীরে বিশেষভাবে বসানো হয়েছে ধান।

প্রতিমার আদি রূপ ফুটিয়ে তুলতে প্রায় ৫০ কেজির মতো ধান লেগেছে বলে জানান বিশ্বজিৎ পাল।

Advertisement

তিনি বলেন, মণ্ডপে দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, মহিষাসুর প্রতিমাগুলো শুকিয়ে যাওয়ার আগে মাটি নরম থাকতে প্রতিমাজুড়ে ধান বসানো হয়। এমনভাবে বসানো হয়েছে যাতে দেখলে মনে হয় যেন সোনা দিয়ে মোড়ানো।

রবি সুষম সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ রায় বলেন, রবি সুষম সংঘ প্রতি বছরই নতুন দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর আমরা ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরির পরিকল্পনা করি। ধান দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করাটা খুব সহজ নয়। আমরা শিল্পী বিশ্বজিৎ পালের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি এই প্রতিমা তৈরি করে দিতে সম্মত হন।

ধান দিয়ে জেলায়ই এটি প্রথম প্রতিমা জানিয়ে তিনি বলেন, বহু বছর আগে স্বর্গীয় নিমাই চন্দ্র পাল নাটোর শহরের লালবাজারে প্রতিমা তৈরির একটি কারখানা গড়ে তোলেন। তার হাতের তৈরি প্রতিমার বেশ কদর ছিল। নিখুঁত হাতে চমৎকারভাবে প্রতিটি প্রতিমা শিল্পকর্মের মাধ্যমে সাজিয়ে তুলতেন তিনি। ফলে নাটোর জেলার বাইরেও তার হাতের তৈরির বিভিন্ন দেবীর প্রতিমার বেশ চাহিদা ছিল। তার মৃত্যুর পর অল্প পরিসরে প্রতিমা তৈরির কাজ করেন তার ছেলে বিশ্বজিৎ পাল এবং ছোট ভাই গোপাল চন্দ্র পাল।

নাটোর জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খগেন্দ্রনাথ রায় বলেন, জেলায় এবার ৩৫৪টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে। গত বছরের থেকে এবার ৩৮টি পূজা কম হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকার কারণে পূজা কম হচ্ছে বলে জানান তিনি। বলেন, তবে নাটোরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাছুদুর রহমান বলেন, পূজামণ্ডপের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ এবং আনসাররা দায়িত্বে থাকবেন।

আগামী মঙ্গলবার দেবী দুর্গার বোধন ও ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ১৩ অক্টোবর বিজয় দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব।

রেজাউল করিম রেজা/জেডএইচ/জেআইএম