ধর্ম

দোয়া কবুলের জন্য নবিজির (সা.) দরুদ

আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) নাম উচ্চারণ করলে বা শুনলে দরুদ পড়া ওয়াজিব। কোনো আলোচনায় বা লেখায় নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাম উচ্চারণ করা হলে বা পাঠ করা হলে লেখক, পাঠক, শ্রোতার জন্য অন্তত একবার নবিজির ওপর দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব। একই বৈঠকে বা লেখায় একাধিকবার নবিজির নাম আলোচিত হলে একবার দরুদ বলা ওয়াজিব, আর একাধিকবার দরুদ পড়া মুস্তাহাব।

Advertisement

এ ছাড়া যে কোনো সময় রাসুলের (সা.) জন্য দোয়া করা, দরুদ পড়া সব সময়ই অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। আল্লাহ কোরআনে নবিজির জন্য সালাত ও সালাম পাঠের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন,

اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا

নিশ্চয় আল্লাহ নবির প্রশংসা করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণ নবির জন্য দোয়া করে। হে মুমিনগণ, তোমরাও নবির ওপর দরুদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও। (সুরা আহজাব: ৫৬)

Advertisement

অনেকগুলো হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) তার জন্য বেশি বেশি দরুদ পড়তে উৎসাহ দিয়েছেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমার জন্য একবার দরুদ পড়বে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। (সহিহ মুসলিম) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বার্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রাসুলের জন্য দরুদ পাঠকারী কেয়ামতের দিন তার কাছে থাকবে। রাসুল (সা.) বলেন, কেয়ামতের দিন লোকদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আমার অধিক নিকটতম হবে, যে ব্যক্তি আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করবে। (সুনানে তিরমিজি)

আমের ইবনে রাবিআ (রা.) বলেন, আমি রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুতবায় বলতে শুনেছি, কোনো মুসলমান যতক্ষণ আমার ওপর দরুদ পাঠ করে, ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করতে থাকে। বান্দারা এটা জেনে তাদের দরুদ পাঠ কমাতে পারে বা বাড়াতে পারে! (মুসনাদে আহমদ, সুনানে ইবনে মাজা)

আল্লাহর কাছে যে কোনো দোয়া করার সময় আল্লাহর রাসুলের জন্যও দোয়া করা, তার প্রতি দরুদ পাঠ করা মুস্তাহাব। দরুদ পাঠ করার পর দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কারণ দরুদ পড়লে আল্লাহ তাআলা খুশি হন। তার ক্ষমা ও রহমত বর্ষিত হয়।

সাহাবিরা তাদের দোয়ায় দরুদ পাঠ করতেন। ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা আপনাদের নবির প্রতি দরুদ না পাঠান ততক্ষণ দোয়া আকাশ ও জমিনের মধ্যে ঝুলে থাকে, এর থেকে কিছুই ওপরে ওঠে না। (সুনানে তিরমিজি)

Advertisement

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আপনারা যখন দোয়া করবেন, তখন প্রথমে আল্লাহর উপযুক্ত প্রশংসা ও গুণগান করুন, তারপর নবিজির (সা.) প্রতি দরুদ পাঠ করুন, তারপর যা প্রার্থনা করতে চান তা প্রার্থনা করুন। এ রকম দোয়া কবুল হওয়ার জন্য বেশি উপযোগী। (তাবরানি)

ওএফএফ/জিকেএস