মালয়েশিয়ায় অভিবাসী পাচার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ২১ বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সিনার হারিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, জোহর সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের রাখা একটি আশ্রয়কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
Advertisement
এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন দেশটির জোহর পুলিশপ্রধান এম কুমার। তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিওিতে জোহর বেড়িবাঁধ এলাকায় এই অভিবাসী পাচারের তৎপরতা চালানো হয়।
তিনি জানান, চলতি বছরের আগস্ট থেকে বাংলাদেশি ও স্থানীয় ব্যক্তিরা এসব সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছিল। এসব অবৈধ অভিবাসীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার আগে তামান দায়ার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হতো এবং সেখান থেকে জনপ্রতি ২০ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ লাখ টাকা) আদায় করা হতো।
এম কুমার আরও জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ভাইস প্রিভেনশন অব ভাইস, জুয়া অ্যান্ড ইলিসিট ক্রাইম ডিভিশন (ডি৭) এবং জোহর কন্টিনজেন্ট পুলিশ সদরদপ্তরের অপরাধ তদন্ত বিভাগ ওই আশ্রয়কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে।
Advertisement
অভিযানের সময় স্থানীয় এক নারী এবং ম্যানেজার, পরিবহনকারী ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করা তিন বিদেশি পুরুষকে আটক করা হয়। এছাড়া ১৯ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ২১ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে ২৫টি মোবাইল ফোন, বাংলাদেশি পাসপোর্ট, মালয়েশিয়ার নগদ এক হাজার ২০০ রিঙ্গিত, সিঙ্গাপুরের ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রা ৫ হাজার ৪৬০ টাকা এবং মাইভি ও আজিয়া গাড়ি জব্দ করা হয়।
সিন্ডিকেট এজেন্টদের ব্যবস্থাপনায় সুলতান ইস্কান্দার ভবনে (বিএসআই) দুর্গম পথ দিয়ে হেঁটে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের আগে অভিবাসীরা সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর থেকে ট্রানজিট নেন। পরবর্তীকালে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য অভিবাসীদের গাড়ি দিয়ে পরিবহনকারীরা পৌঁছে দেন।
রিমান্ডে থাকা সবার তদন্তের কাগজপত্র ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসে পাঠানো হয়েছে এবং ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩ এর ৬(১)(সি) ধারায় ২১ জন অভিবাসীকে অভিযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
আশ্রয়কেন্দ্রের চার ম্যানেজার বা পরিবহনকারী বা তত্ত্বাবধায়ককে ২০০৭ সালের মানবপাচার ও অভিবাসীদের চোরাচালানবিরোধী আইনের ২৬(এ) ধারায় অভিযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর জোহর বাহরু ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ২১ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আগামী ১৩ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশপ্রধান এম কুমার।
এমকেআর/জিকেএস