আইন-আদালত

ডা. ঈশিতার দণ্ড বাতিল, দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় চিকিৎসক ইশরাত রফিক ঈশিতাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মিথ্যা মামলার কারণে সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তিদের তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ডা. ঈশিতার আপিল মঞ্জুর করে গত ২৯ মে রায় দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ। বুধবার (২ অক্টোবর) ওই রায়ের ২৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। আদালতে ওইদিন ঈশিতার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ছিলেন মুজিবুর রহমান মিয়া, অ্যাডভোকেট শেখ কানিজ ফাতেমা ও অ্যাডভোকেট মো. নাজমুল ইসলাম।

রায়ে বলা হয়, ‘২০২১ সালের ২৮ জুলাই ঈশিতাকে মিরপুর-১৪ এর উত্তর ইব্রাহীমপুরের নিজের বাসা থেকে র‌্যাব ১–এর কর্মকর্তারা আলাপ আছে বলে প্রতিবেশীসহ এলাকাবাসীর সামনে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারের পর চারদিন অজ্ঞাতস্থানে বে-আইনিভাবে আটক রেখে ২০২১ সালের ১ আগস্ট সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট সময় দেখিয়ে পরদিন (২ আগস্ট) সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে মামলা দায়েরের তারিখ ও সময় দেখানো হয়। যা আইন পরিপন্থি।

একই ঘটনাস্থল দেখিয়ে এজাহারকারীর তিনটি পৃথক মামলা দায়ের এবং ওই কথিত ঘটনাস্থল থেকে তাকে পুনরায় গ্রেফতার দেখানো এজাহারকারীসহ এতদঘটনার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তির বেআইনি ও এখতিয়ারবিহীন, আইনের সব বিধিবিধান ও সংবিধান পরিপন্থি।’

Advertisement

ওই মামলায় গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত রায় দেন।

এই রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছর হাইকোর্টে আপিল করেন ঈশরাত। হাইকোর্ট অভিযোগের দায় থেকে ঈশরাতকে অব্যাহতি, সাইবার ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

রায়ে হাইকোর্ট বলেন, এই রায় ও আদেশের অনুলিপি পাওয়ার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে আপিলকারীর (ঈশরাত) বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলার কারণে এজাহারকারীসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই আদালতকে অবহিত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হলো।

ঈশরাতের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেছিলেন র‌্যাব-৪ এর তৎকালীন ডিএডি খন্দকার মো. আমির আলী (পুলিশ পরিদর্শক)। আর জব্দ তালিকা করেছিলেন র‌্যাব-৪ এর এসআই মঈনুল হোসেন।

Advertisement

এদিকে ২০২১ সালের জুলাই মাসে চিকিৎসক ঈশরাত রফিক ঈশিতাকে গুমের অভিযোগে র‌্যাবের তৎকালীন ছয় সসদ্যের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ওই চিকিৎসক গত ২২ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর এ অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ওইদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, এই চিকিৎসক যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএএচডি করছিলেন। ময়মনসিংহের কমিউনিটি বেজড হসপিটালের চিকিৎসক ছিলেন। তাকে ২০২১ সালের ২৮ জুলাই সালে তুলে নিয়ে যায় র‌্যাব। ৫ দিন পর ২ আগস্ট তাকে আদালতে তোলা হয়। মাদকের মামলা দেওয়া হয়। তিন মামলায় ১২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এই যে মাঝখানে ৫ দিন তাকে গুম করে রাখা হয়। নানানভাবে তাকে টর্চার করা হয়। তিনি গুমের অভিযোগ দিয়েছেন। এটা গ্রহণ করেছি। এটা পর্যালোচনা করে দেখবো। এই চিকিৎসক ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এফএইচ/এমআরএম/এএসএম