সাঈদ আহমেদ একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান ক্রিকেটার। ১৬ বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে অভিবাসী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান ক্রিকেট খেলা। দীর্ঘ সময় ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার পর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
Advertisement
চলতি বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসের লেবার ডে তে অনুষ্ঠিত হলো ইউএসএ অনূর্ধ্ব- ১৯ দলের ক্রিকেট কনফারেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট। ১৬ দলের অংশগ্রহণে মিশিগানে স্ট্যাটের কোচিংয়ে দায়িত্ব পান বাংলাদেশি-আমেরিকান ক্রিকেটার সাঈদ আহমেদ।
এ অর্জনের জন্য সাঈদ আহমেদকে অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন অনেকেই। বিপিএলের সিলেট স্ট্রাইকার্সের পরিচালক জগলুল হুদা মিঠু লিখেছেন, প্রিয় সাঈদ আহমেদ, আপনার এই অর্জনে খুবই আনন্দিত এবং বাংলাদেশি-আমেরিকান হিসেবে খুবই গর্বিত। আপনাকে অভিনন্দন।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার এবং ইউএসএ ক্রিকেট বোর্ডের অপারেশন মেম্বার গোলাম নওশের প্রিন্স বলেন, ইউএসএ ক্রিকেট কোচিংয়ে বাংলাদেশি-আমেরিকান সাঈদ আহমেদের যুক্ত হওয়াটা আসলেই আনন্দের। ইউএসএ ক্রিকেটের উন্নতির জন্য তিনি যেন আরও ভালো কিছু করতে পারেন, তার জন্য দোয়া ও ভালোবাসা রইলো।
Advertisement
এসব বিষয়ে কথা হয় সাঈদ আহমেদের সঙ্গে। তিনি জানান, অভিবাসী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর পড়াশোনার পাশাপাশি ২০০৪ সালে মিশিগানের হ্যামট্রামেক সিটির স্কুলের পার্কিং লটে আমরা ৬-৭ জন বন্ধু মিলে ক্রিকেট খেলা শুরু করি। ২০১৩ সালে হ্যামট্রামেক সিটির সাবেক কাউন্সিলর এনাম মিয়া ও নাজেল হুদার সহযোগিতায় সিটির মেমোরিয়াল পার্কের মাঠে ক্রিকেট খেলার জায়গা বন্দোবস্ত হয়। এখান থেকে প্রথমে মাঠে শুরু করি খেলা।
সাঈদ বলেন, ২০১৭ সালের ডেট্রয়েট সিটির বাংলা টাউনের লাস্কি ক্রিকেট মাঠ ও জেইন ফিল্ডে ২টা ক্রিকেট গ্রাউন্ডের জন্য সিটি প্রশাসনের কাছে আবেদন করি। সিটি কাউন্সিলর স্কাট বেনসনের সার্বিক সহযোগিতায় ডেট্রয়েট সিটির বর্তমান মেয়র মাইক ডোগান ২০১৭ সালের ৫ আগস্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর থেকেই আমরা স্বাচ্ছন্দে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যেতে পারছি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ পথ চলার পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি-আমেরিকানদের দ্বারা ১৪টি টিমের অংশগ্রহণে প্রতিবছর এই ২ মাঠে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্টিত হচ্ছে। প্রতিটি দলেই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা অংশগ্রহণ করেন।
সাঈদ আহমেদ আরও বলেন, যেহেতু আমি ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত, এ কারণে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কিছু করার তাগিদে ২০১৭ সালে কোচিংয়ের জন্য ক্রিকেট একাডেমি অব ডিট্রয়েট নামের একটা সেন্টার খুলি। এখান থেকে আমার কোচিংয়ের যাত্রা শুরু।
Advertisement
কোচিংয়ে ইউএসএ ক্রিকেটে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি খুবই আনন্দিত। আমার বহু বছরের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে এই অর্জনে। বাংলাদেশি-আমেরিকান হিসেবে খুবই গর্ববোধ করছি। আমি চেষ্টা করছি আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যাতে ইউএসএ ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। সবার কাছে দোয়া চাই যাতে ইউএসএ ক্রিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশি আমেরিকানদের গৌরবান্বিত করতে পারি।
সিলেট শহরের বালুচরে বড় হলেও সাঈদ আহমেদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কাতিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম বাবুল আহমেদ বাচ্চু ও মা সাফিয়া বেগম।
কেএসআর/এএসএম