ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল হোসেন, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে ৪৪ গণপিটুনির ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট করা হয়েছে। রিটে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাসহ এ ধরনের ‘মব জাস্টিসের’ বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।
Advertisement
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আদেশ ‘নট টুডে’ রেখেছেন। আদালতে এদিন রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন ও মো. শাহীনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।
‘মব জাস্টিস’ বা ‘মব কিলিং’ বা ‘মব লিঞ্চিং’ তথা উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে বিচার বা হত্যা বা নির্যাতন রোধে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করা হয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা নাছরিন ও অ্যাডভোকেট মো. শাহিনুজ্জামান শাহিনের পক্ষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর এ রিট করেন জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না। রিটে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
Advertisement
রিট আবেদনে রুল চাওয়ার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শামীম মোল্লা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে আবদুল্লাহ আল মাসুদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাসহ এ ধরনের ‘মব জাস্টিসে’ জড়িতদের খুঁজে বের করতে বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আবেদনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, সেনাবাহিনীর প্রধান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি), জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বিজিবির মহাপরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ ৬৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে গণপিটুনি বা মব জাস্টিস রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- সে বিষয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে মব জাস্টিস বা গণপিটুনি রোধে বিবাদীদের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর দায়ের করা রিটের বিষয়টি গতকাল সোমবার জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট মো. শাহিনুজ্জামান শাহিন। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরকার পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে ৪৪ জনের মতো গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। সব গণপিটুনির ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট করেছি আমরা।
Advertisement
এফএইচ/কেএসআর/এমএস