জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কুকুর নিধন উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
Advertisement
তিনি বলেন, যদি ৭০ শতাংশ ভ্যাকসিনের মাধ্যমে জলাতঙ্কের শক্ত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা যায়, তাহলে সেটি আমরা করবো না কেন? কুকুর নিধনটা আমার কাছে কষ্টকর মনে হয়। এই ধরনের চিন্তাভাবন কারও থাকা উচিত নয়। একটি প্রাণ হত্যা করা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তর রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) থ্রিডি হলে যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
জলাতঙ্কের বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণায়ের উপদেষ্টা বলেন, আমি একটি বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। যেখানে জলাতঙ্ক রোগ শতভাগ মৃত্যুর কারণ, আবার এটি শতভাগ নিরাময় যোগ্য। এমন একটি অবস্থা থেকে আমরা নিরাময়ে থাকবো না কেন?
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে যদি আমরা এসডিজি ৩ দশমিক ৩ অর্জন করতে চাই, তাহলে জলাতঙ্ক নির্মূল করতে হবে। সেখানে যদি জলাতঙ্ক নির্মূল করতে না পারি, তাহলে এসডিজি ৩ দশমিক ৩ অর্জন হবে না। আর মাত্র ৫ বছরের কিছু বেশি সময় বাকি। জলাতঙ্ক নির্মূলে যতটুকু দায়িত্ব আমাদের (প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়) আছে, সেটি আমাদের এখনই পালন শুরু করতে হবে।
আরও পড়ুনজলাতঙ্ক যেভাবে হয়, জেনে নিন রোধের উপায়তরুণদের মধ্যে প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা বেশি জানিয়ে আলোচনা সভায় ফরিদা আখতার বলেন, এবার তরুণেরা দেশে যে ঘটনা ঘটিয়ে দিয়েছে, নিজেদের প্রাণ দিয়ে নতুন বাংলাদেশ দিতে পেরেছে, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিসর্জন দিয়েছে, এই তরুণ প্রজন্মের কাছে আমরা যদি মানুষের পাশাপাশি সব ধরনের প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা পাই, তাহলে বাংলাদেশ অবশ্যই সুন্দর হবে। আমরা যেন সব প্রাণের বাঁচার সুযোগ তৈরি করতে পারি সেই চেষ্টা করতে হবে। আমাদের মনটাকে অনেক বেশি মানবিক করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, মানুষ জানে জলাতঙ্ক হলে মারা যাবে, তাৎক্ষণিক মারাও যাচ্ছে না। এটার যে কষ্ট, তা অনেক হৃদয়স্পর্শী। জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করলে হবে না, সম্মিলিত সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এটিএম মোস্তফা কামাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. শেখ ছাইদুল হক, অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
ইউএসএআইডি ওয়ান হেলথ অ্যাক্টিভিটির অ্যানিমেল হেলথ টিম লিড অধ্যাপক পরিতোষ কুমার বিশ্বাসের স্বাগত বক্তব্যের পর আলোচনা সভায় তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে ডা. সুকেশ চন্দ্র বৈদ্য, ড. শেখ দাউদ আদনান ও রাকিবুল হক এমিল।
এনএইচ/ইএ/জেআইএম