ভ্রমণ

কাশফুলের রাজ্যে হারিয়ে যান শীতলক্ষ্যার পাড়ে

রাজধানী ঢাকার লাগোয়া উপজেলা গাজীপুরের কালীগঞ্জ। সারাবছর সেখানে ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত থাকলেও শরতে তা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। প্রকৃতি যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। বর্ষাকালে স্বচ্ছ থৈ থৈ পানিতে সারি সারি নৌকা আর শরতে সাদা কাশফুলের দোলা যে কারো মন ছুঁয়ে যাবে।

Advertisement

শরৎ শেষ হতে আর কয়েকদিন বাকি, এর মধ্যে কাশফুলের শুভ্রতায় মুগ্ধতা খুঁজছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার অনেকেই। বেলা বাড়লেই সেখানে লোক সমাগম বেড়ে যায়।

জমজমাট হয়ে ওঠে উপজেলা পরিষদের সামনে শীতলক্ষ্যা পাড়ের শ্মশান ঘাট এলাকা। কাশফুলের শুভ্রতায় সেখানে বসে কেউ গল্প করেন। কেউবা আবার কাশফুলের সঙ্গে সেলফি বা ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

কাশফুল দেখতে আসা কালীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ি সুমন হোসেন সৈকত বলেন, ‘এখানকার সারি সারি সাদা কাশফুল মন ছুঁয়ে যায়। যতদূর চোখ যায় শুধু সাদা আর সাদা। পাখির চোখে দেখলে মনে হবে মাটিতে লুটে পড়েছে সাদা মেঘের ভেলা। বিকেলের নীল আকাশে সাদা মেঘ আর শ্মশান ঘাটের সাদা কাশফুল যেন এখানে মিলে মিশে একাকার।’

Advertisement

কাশবনে ঘুরতে আসা মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘যান্ত্রিকতার ভিড়ে একটু প্রকৃতির ছোঁয়া ও সবুজঘেরা পরিবেশের পাশাপাশি প্রতিদিন এখানে আসছেন শত শত মনুষ।’

আরও পড়ুন সবাই মুগ্ধ গুঠিয়া মসজিদের সৌন্দর্যেআইফোন ১৬ এর দামে ঘুরতে পারবেন যেসব দেশে

আরেক দর্শনার্থী স্থানীয় আবুল খায়ের সিরামিক কারখানায় কর্মরত হিরন সরকার বলেন, ‘এই কাশবনে একবার যে কেউ ঢুঁ মারলেই তিনি এখানকার প্রেমে পড়বেন। কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ভেতর এত কাশফুল হয়তো দেখাও যায়নি আগে। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কাশফুলের সাদার শুভ্রতায় যে কারো মন হারিয়ে যাবে অজানায়।’

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুলের মধ্যে কাশফুল অন্যতম। বাংলাদেশের সব নদ-নদীর তীরে প্রাকৃতিক জলাশয়ের ধারে বেশি কাশফুল জন্মে। কাশবন শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদের মনের তৃপ্তি মেটায় না। এ কাশবন দিয়ে আগে অনেক মানুষ ঘর তৈরি করতেন। এখন পানের বরে ছাউনি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একই সঙ্গে রান্নার জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, ‘দ্রুত নগরায়নের ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার চিরায়িত রূপ। কালীগঞ্জেও দিন দিন বাড়ছে মানুষ, কমছে আবাদি অনাবাদি জমি। তাই যেখানেই মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশ পাচ্ছে তাতেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে। তাছাড়া এলাকাটি পৌর শহরের কাছে ও নিরাপদ হওয়ায় দিন দিন লোক সমাগম বাড়ছে।

Advertisement

এআরএ/জেএমএস/জেআইএম