ফিচার

গভীর সমুদ্রের রহস্যময় দৈত্য ওয়ারফিশ

সমুদ্র কত যে রহস্য নিয়ে বসে আছে তার হয়তো কোনো সীমা নেই। কতটুকুই বা আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি! সমুদ্রের গভীরে আছে হাজার হাজার প্রজাতির প্রাণি, যার বেশিরভাগই আমাদের অজানা। তেমনই গভীর সমুদ্রের রহস্যময় এক প্রাণি ওয়ারফিশ।

Advertisement

এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘রেগালেকাস গ্লেসনে’। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম মাছ। সাধারণত এটি লম্বায় ১০ মিটার হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে এর দৈর্ঘ্য ১৪ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ওয়ারফিশের শরীর অত্যন্ত দীর্ঘ এবং সরল। এর শরীরের পৃষ্ঠের রং রূপালি। এছাড়াও পিঠে একটি দীর্ঘ এবং রঙিন পাখনা রয়েছে। যা দেখতে অনেকটা সামুদ্রিক সাপের মতো।

এদের শরীরের স্বচ্ছ ত্বক এবং পেছনে থাকা লম্বা পাখনাগুলো একে সূক্ষ্মভাবে সাঁতার কাটতে সাহায্য করে। যা এই সামুদ্রিক দৈত্যকে গভীর সমুদ্রের শিকারী থেকে রক্ষা করে।

আরও পড়ুন

Advertisement

সাপের উপদ্রব বাড়ে কেন?

ওয়ারফিশের আবাসস্থল সাধারণত ২০০ মিটার গভীর সমুদ্র, যেখানে এটি অন্ধকার ও ঠান্ডা পানিতে বিচরণ করে। এই মাছটি মূলত একক জীবনযাপন করে, যদিও কখনো কখনো কয়েকটি একত্রিত হয়ে থাকতে দেখা যায়।

ওয়ারফিশের খাদ্য তালিকায় প্রধানত ছোট মাছ, প্লাঙ্কটন ও অক্টোপাস থাকে। এরা শিকার করার সময় তাদের লম্বা পিঠের সাহায্যে দ্রুতগতিতে শিকারকে ধরতে সক্ষম হয়।

ওয়ারফিশের উপস্থিতি অনেক সময় লোকালয় এবং সমুদ্রের জলদস্যুদের কাহিনিতে মৎস্যদানব হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাদের দীর্ঘ এবং অদ্ভুত আকৃতি কারণে, অনেক মানুষ এটিকে ‘সমুদ্রের সাপ’ হিসেবে বিবেচনা করে। অতীতে যখন এই মাছগুলো সমুদ্রের তীরে মারা যেত, তখন লোকেরা এটি দেখে ভয় পেত। অনেকের ধারণা ছিল এটি কোনো ধরনের গুজব বা অশুভ সঙ্কেত।

ওয়ারফিশের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে, যা প্রধানত তাদের বাসস্থান হারানোর কারণে ঘটে। জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রের দূষণ এবং অবৈধ মৎস্য শিকার তাদের জন্য হুমকির সৃষ্টি করছে। গবেষকরা তাদের সংরক্ষণ এবং জীবনচক্রের সম্বন্ধে আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন।

Advertisement

ওয়ারফিশ একটি রহস্যময় এবং আকর্ষণীয় সামুদ্রিক প্রাণি, যা গভীর সমুদ্রের জীবনকে নির্দেশ করে। তাদের সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য চাইলেই রক্ষা করতে পারি।

আরও পড়ুন

এক রাতেই মারা যায় গ্রামের ১৮০০ মানুষ বিশ্বের কোথায় আছে ট্রেন, টায়ারের কবরস্থান জানেন?

তথ্য: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, ব্রিটানিকা, ফিশবেস

কেএসকে/এমএস