মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান, হৃদয়ের স্পন্দন বাইতুল্লাহ। যারা বাইতুল্লাহ প্রবেশে বাধা দেয় আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সবচেয়ে বড় জালেম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাছাড়া যুগে যুগে অসংখ্য অত্যাচারী শাসকবর্গ আল্লাহ তাআলার পবিত্র নিদর্শন মসজিদ এবং আসমানি গ্রন্থসমূহ আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল। তাদের বাড়াবাড়ির ফলে আল্লাহ তাআলা স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেন-‘আর তার চেয়ে বড় জালেম কে হবে, যে আল্লাহর ঘরে তাঁর নাম স্মরণ করা থেকে মানুষকে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালায়, এই ধরনের লোকেরা এসব ইবাদাত গৃহে প্রবেশের যোগ্যতা রাখে না। আর যদি কখনো প্রবেশ করে, তাহলে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় প্রবেশ করতে পারে। তাদের জন্য রয়েছে এ দুনিয়ার লাঞ্ছনা এবং আখিরাতের বিরাট শাস্তি। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১১৪)৬ষ্ঠ হিজরিতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৪০০ (চৌদ্দশত) নিরস্ত্র সাহাবি নিয়ে মদিনা হতে বাইতুল্লাহ জিয়ারতে রওয়ানা হয়ে হুদাইবিয়া নামক স্থানে আসলে মক্কার কাফের পৌত্তলিকরা তাঁকে মক্কা প্রবেশে বাধা দেয়।বিশ্বনবির এ সফরের উদ্দেশ্য ছিল বাইতুল্লাহ জিয়ারাত, তাওয়াফ এবং নামাজ আদায়। কোনো প্রকার যুদ্ধ-বিগ্রহ চিন্তা ছিল না। এ কথা জানানো সত্ত্বেও পৌত্তলিকরা বিশ্বনবিকে বাইতুল্লায় প্রবেশে বাধা দেয়। যার ফলে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করেন। (ইবনে জারির)হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, খ্রিস্টান রাজা তাইতুস ইবনে আছিয়ানুস ইয়াহুদিদের বিরুদ্ধে যু্দধ করতে গিয়ে বাইতুল মুকাদ্দাস তছনছ ও তাওরাত কিতাব পুড়িয়ে দিয়েছিল, এ ঘটনার স্মরণে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করেন।সর্বোপরি এ আয়াত যখন যে কারণেই নাজিল হোক, মসজিদে প্রবেশে বাধা প্রদান শুধু ইসলামের প্রাথমিক যুগেই হয়নি বরং যুগ যুগ ধরে মসজিদে প্রবেশে বাধার কার্যক্রম চলে আসছে, এখনো চলছে, ভবিষ্যতেও ইসলাম বিদ্বেষীরা এ কাজ অব্যাহত রাখবে। আর তাদের ব্যাপারেই কুরআনে দুনিয়ার লাঞ্ছনা-অপমান এবং পরজগতের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ ধরনের ঘৃণিত ও জঘন্য অপরাধ থেকে হিফাজত করুন। শুধু মসজিদই নয়, কুরআন-সুন্নাহর বিধান দুনিয়ার সব জায়গায় বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/আরআইপি
Advertisement