জাতীয়

সারাদেশে দেবোত্তর সম্পত্তি দখল মুক্ত করার দাবি

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ন্যায়সংগত দাবিসমূহ মেনে নেওয়া, মঠ মন্দিরসহ সব দেবোত্তর সম্পত্তি জবর দখল মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার সংরক্ষণ পরিষদ।

Advertisement

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সন্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।

এসময় বাংলাদেশ দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বড়াল বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সব সরকার হিন্দুদের সম নাগরিক হিসেবে অধিকার দিয়েছে কি না সন্দেহ। আমাদের মন্দির হলো দেবোত্তর সম্পত্তি। এগুলোর জন্য আইন তৈরির বিষয়ে আমরা বার বার আবেদন জানিয়েছিলাম। মন্দিরের জায়গাগুলোতে যদি পেশিশক্তি আস্ফালন হয়, দখল হয় তাহলে সেখানে আমাদের ধর্ম করার সুযোগ কোথায়। ধর্ম-কর্ম করার জন্য একটা নীরব-নিভৃত ও মানবিক পরিবেশ লাগে, যেখানে মানুষের মন থেকে ধর্মীয় ভাব সৃষ্টি হয়। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই আমাদের সম্পত্তি যেন মন্দির ও হিন্দুদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এসময় সংবাদ সন্মেলনে কী পরিমাণ সম্পত্তি দখল রয়েছে ও কত বছর যাবত দখলে রয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগ, ১৯৭১ এ স্বাধীনতা পরসহ বিভিন্ন সময়ে এই জমিগুলো দখল হয়েছে। ঢাকার রমনা কালি মন্দির, ঢাকেশ্বরী ও পুরান ঢাকায় বিভিন্ন মন্দিরের জায়গা দখলে রয়েছে। আমরা সারাদেশ থেকে তালিকা তৈরি করছি। এরপর কতটুকু সম্পত্তি দখলে রয়েছে আমরা জানাবো।

Advertisement

অন্য বক্তারা বলেন, দেবাত্তর সম্পত্তি দেশের সব জায়গায় দখল করা হয়েছে। এই সম্পত্তি যেন মন্দিরের দখলে দেয়। আমরা বিগত সরকারের আমলে বেশ কয়েকবার স্মারকলিপি দিয়েছি।

তারা আরও বলেন, আমরা আসন্ন দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটির দাবি জানাই। সামনে দূর্গা পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এসময় সংগঠনটির পক্ষে থেকে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিসমূহ হলো:

১। চিরস্থায়ী দেবোত্তর সম্পত্তিতে সব প্রকার অবৈধ জবর দখল অন্যায়, দাবি বাতিল করে হিন্দু সম্প্রদায়কে পবিত্র দেবোত্তর সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে হবে।

২. প্রতিটি শিক্ষা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ধর্ম পালনের স্থায়ী উপসনালয় নির্মাণ করতে হবে।

Advertisement

৩. সংস্কৃতি ও পালি শিক্ষাবোর্ডকে পূর্ণাঙ্গ বোর্ডের স্বীকৃতি দিতে হবে।

৪. হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে পরিবর্তন করতে হবে।

৫. শত্রু সম্পত্তি অর্পিত ও অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের ন্যায় কালো আইন বাতিল করে অন্যায় সুবিধাভোগীদের কবল থেকে সম্পত্তি উদ্ধার পূর্বক হিন্দু সম্প্রদায়কে ফিরিয়ে দিতে হবে।

৬. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও ধর্ম অবমাননার হাত থেকে হিন্দুদের রক্ষা করতে হবে।

৭.হিন্দু নাবালিকা মেয়েদের প্রচলিত আইনের জালে ফেলে ধর্মান্তরিত করা নিষিদ্ধ করতে হবে।

৮. সরকারি চাকরিতে জনসংখ্যানুপাতে নিয়োগ দিতে হবে।

৯. মন্দিরভিত্তিক ধর্ম শিক্ষা কার্যক্রমে ছেলে-মেয়েদের সংখ্যাপদ্ধতি রদ, রহিত করতে হবে। শিক্ষাকেন্দ্র নির্বাচনে অনগ্রসর, দরিদ্র, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত জনসম্প্রদায়কে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

আরএএস/এসএনআর/এএসএম