দেশজুড়ে

পদ পেয়ে মন্ত্রীকে ডাকেন বাবা, পদত্যাগেও হয়নি শেষ রক্ষা

পদত্যাগপত্র জমা দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা কামালের। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় জেলা শহরের টিএ রোডের কালীবাড়ি মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে সদর মডেল থানা পুলিশ।

Advertisement

মোস্তফা কামালকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, একটি হত্যা মামলায় এজহারভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

নবীনগর উপজেলার মোস্তফা কামাল একটি বেসরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল পদে রয়েছেন। মোস্তফা কামাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান ভালো থাকায় আস্থা অর্জন করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ফাহিমা খাতুনের। ফলে জীবনে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও মন্ত্রীর আশীর্বাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটিতে পেয়ে যান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের পদ। পদ পাওয়ায় নিজের জন্মদাতা বাবার পর সাবেক এমপি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে কর্মজীবন ও রাজনৈতিক জীবনের বাবা বলে সম্বোধন করেছিলেন এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলে সমালোচনা। দলীয় পদ পেয়ে টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় যোগদানও করেন মোস্তফা কামাল।

৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগের শাসন আমলে সংঘটিত নানান ঘটনায় একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে। এসব মামলায় আসামি হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এই অবস্থায় গা-ঢাকা দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রিন্সিপাল মোস্তফা কামাল। পরে ১৩ সেপ্টেম্বর একটি সাদা কাগজে হাতে লিখে সাক্ষর করে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগের আবেদন করেন মোস্তফা কামাল। এরপর তিনি প্রকাশ্যে আসেন। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে একটি হত্যা মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে।

Advertisement

এদিকে, গ্রেফতারের পর পর মোস্তফা কামালকে নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই ১৩ আগস্ট প্রিন্সিপাল মোস্তফা কামাল নিজে চিঠি দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি নেন। দায়িত্বশীল পদে থেকেও দলের কঠিন মুহূর্তে প্রিন্সিপাল মোস্তফা কামাল দলের পাশে থাকেননি, বরং নিজেকে বাঁচাতে দল ছেড়ে চলে গেছেন। সুবিধাবাদী প্রিন্সিপাল মোস্তফা কামালের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/জেএইচ